ভারতের ইলেকট্রিক ভেহিকেলের (EV) বাজারে টেসলার (Tesla) প্রবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা আলোচনা চলে আসছে। তবে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্পমন্ত্রী এইচ. ডি. কুমারস্বামীর সাম্প্রতিক মন্তব্য সেই আলোচনায় নতুন মোড় এনে দিয়েছে। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, টেসলা (Tesla) ভারতে গাড়ি উৎপাদনে আগ্রহী নয়, তাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র শোরুম খুলে গাড়ি বিক্রি করা।
মন্ত্রী কুমারস্বামী বলেন, “টেসলা শুধু শোরুম খুলতে চায়, ভারতে উৎপাদনের কোনও ইচ্ছা তাদের নেই।” তিনি আরও জানান, নতুন ইভি নীতির আওতায় ইতিমধ্যেই ভক্সওয়াগেন, স্কোডা, মার্সিডিজ-বেঞ্জ, হুন্দাই ও কিয়া-র মতো ব্র্যান্ডগুলি ভারতে উৎপাদনের আগ্রহ দেখিয়েছে।
ছোট গাড়িকে বাঁচান! কাতর আর্জি নিয়ে সরকারের দ্বারস্থ Alto নির্মাতা
ভারতের বাজার ‘কঠিন’, বলছে Tesla
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই টেসলার (Tesla) চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (CFO) বৈভব তানেজা বলেছিলেন, “ভারত একটি কঠিন বাজার”, এবং ১০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক ক্রেতাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা তৈরি করে। এরই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন ইভি নীতির অধীনে এই শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশে নিয়ে এসেছে, তবে এর জন্য নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন, সংস্থাকে ভারতে অন্তত ৪,১৫০ কোটি টাকা (৫০ কোটি মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করে উৎপাদন শুরু করতে হবে।
এই নীতিকে ভারতের ইভি শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ টানার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনেকে আশা করেছিলেন, এই নীতির মাধ্যমে টেসলা অবশেষে ভারতে উৎপাদন শুরু করবে। তবে কুমারস্বামীর মন্তব্য সেই সম্ভাবনাকে কিছুটা ধাক্কা দিয়েছে।
ভারতে খুচরো ব্যবসার প্রস্তুতি নিচ্ছে Tesla
যদিও উৎপাদনে আগ্রহ নেই বলেই জানানো হয়েছে, তবুও টেসলা ভারতের বাজারকে একেবারে এড়িয়ে যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে সংস্থাটি ভারতীয় বাজারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এবং মুম্বাইয়ে একটি রিটেল স্পেসও বুক করেছে বলে জানা গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, কোম্পানিটি অন্তত বিক্রয় ও পরিষেবা কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনায় অগ্রসর হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের ইভি নীতি নতুন করে আন্তর্জাতিক নির্মাতাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। যদিও টেসলা (Tesla) উৎপাদনে আসার ইঙ্গিত দেয়নি, তবে শোরুম ও পরিষেবার মাধ্যমে বাজারে উপস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। এখন দেখার বিষয়, ভবিষ্যতে কোম্পানিটি ভারতীয় বাজারের চাহিদা ও সুযোগ বুঝে নীতিগত অবস্থানে পরিবর্তন আনে কী না।