বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর প্রিয় মেসেজিং অ্যাপ WhatsApp এবার বড় পরিবর্তনের পথে। অ্যাপটি এতদিন ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় হলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়িক প্রচার ও প্রোমোশনের হাতিয়ারেও পরিণত হয়েছে। এর ফলে স্প্যাম মেসেজ এবং অপরিচিত নম্বর থেকে আসা অনাকাঙ্ক্ষিত টেক্সটের সংখ্যা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। ব্যবহারকারীদের এই বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা দূর করতে মেটা মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ এবার কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে — এবার থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি মেসেজ পাঠানো যাবে না।
মাসিক মেসেজ সীমা চালু করছে WhatsApp
প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, হোয়াটসঅ্যাপ এমন একটি নতুন সিস্টেমের পরীক্ষা শুরু করেছে যেখানে ব্যবহারকারীদের জন্য মাসিক মেসেজ সীমা নির্ধারিত থাকবে। বিশেষ করে যারা তাদের কনট্যাক্ট লিস্টের বাইরে থাকা মানুষ বা গ্রাহকদের মেসেজ পাঠান, তাদের ক্ষেত্রেই এই সীমা প্রযোজ্য হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি যদি কোনও কনফারেন্সে কাউকে দেখে তাকে মেসেজ করেন এবং কোনও রিপ্লাই না পান, তবে প্রতিটি মেসেজ আপনার মাসিক সীমার অংশ হিসেবে গণনা হবে। অর্থাৎ, রিপ্লাই না পাওয়া তিনটি মেসেজ মানে হবে তিনটি “স্ট্রাইক”। এই নিয়ম মূলত ব্যবসায়ী ও প্রোমোশনাল অ্যাকাউন্টগুলিকে লক্ষ্য করে আনা হচ্ছে, যারা অজস্র মেসেজ পাঠিয়ে সাধারণ ব্যবহারকারীদের বিরক্ত করে থাকে।
হোয়াটসঅ্যাপ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি ঠিক কত সংখ্যক মেসেজ পাঠানোর পর ব্যবহারকারীকে থামিয়ে দেওয়া হবে। টেকক্রাঞ্চের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোম্পানি বর্তমানে বিভিন্ন সীমা নির্ধারণ করে পরীক্ষা চালাচ্ছে। যখন কোনও ব্যবহারকারী বা ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট সীমার কাছাকাছি পৌঁছে যাবেন, তখন অ্যাপে একটি পপ-আপ বার্তা দেখা যাবে যা জানাবে যে তিনি সীমার কাছাকাছি রয়েছেন। যদি সতর্কবার্তা উপেক্ষা করা হয়, তবে নতুন ব্যবহারকারীদের মেসেজ পাঠানোর ক্ষেত্রে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
কোন ব্যবহারকারীদের জন্য নয় এই বিধিনিষেধ
হোয়াটসঅ্যাপ-এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, সাধারণ ব্যবহারকারীদের এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ অধিকাংশ ব্যক্তিগত ব্যবহারকারী এই সীমার কাছাকাছিও পৌঁছবেন না। এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হল স্প্যাম ও গণহারে মেসেজ পাঠানো বন্ধ করা, যাতে ব্যবহারকারীদের মেসেজিং অভিজ্ঞতা আরও নিরাপদ ও আরামদায়ক হয়। অর্থাৎ, বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে দৈনন্দিন চ্যাটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।
মেটার তরফে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই নতুন মেসেজ সীমা ফিচারটি বিভিন্ন দেশে ধাপে ধাপে রোলআউট করা হবে। এটি চালু হলে হোয়াটসঅ্যাপ-এর ব্যবসায়িক ব্যবহারকারীরা কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হবেন, তবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, এই নতুন নিয়ম WhatsApp-এর স্প্যাম বিরোধী লড়াইয়ে বড় পদক্ষেপ হতে চলেছে। ব্যবহারকারীদের ইনবক্সকে পরিষ্কার ও ঝামেলামুক্ত রাখতে এটি নিঃসন্দেহে একটি কার্যকরী পরিবর্তন।