ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিধি প্রতিদিনই বাড়ছে। তবে এতদিন পর্যন্ত তা মূলত শহরকেন্দ্রিকই ছিল। এবার সেই দৃশ্যপট বদলাতে চলেছে। টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) একটি বড়সড় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। কী শুনবেন? এখন দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল, ছোট শহর ও মফস্বলেও সহজলভ্য হবে দ্রুতগতির এবং সস্তা ইন্টারনেট। ট্রাই-এর এই নতুন পদক্ষেপের ফলে সাধারণ দোকানদাররাও নিজেদের দোকানে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ পেতে সক্ষম হবেন এবং তা ক্রেতাদের মাঝে কম দামে বিতরণ করতে পারবেন।
চায়ের দোকানেও চালু হবে Wi-Fi পরিষেবা
ট্রাই (TRAI) ঘোষণা করেছে যে, যেসব ছোট দোকান, যেমন চায়ের দোকান, পানের দোকান বা কিরানা স্টোরে পাবলিক Wi-Fi পরিষেবা (PDO) চালু আছে বা চালু করা হবে, তারা ইন্টারনেট পরিষেবা পাবে সেই একই দামে যা সাধারণ ব্রডব্যান্ড গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। এই নিয়ম ২০০ Mbps পর্যন্ত গতি সম্পন্ন Wi-Fi পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এর ফলে বহু সাধারণ মানুষ যারা এতদিন মোবাইল ডেটার উচ্চমূল্যের কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারে সীমাবদ্ধ ছিলেন, এবার তারা সুলভ মূল্যে ও ভালো গতির ইন্টারনেট পেতে শুরু করবেন।
Vivo X200 FE নির্ধারিত সময়ের আগেই আসছে! ফাঁস হল ডিজাইন ও কালার অপশন
ট্রাই জানিয়েছে, এখনও দেশের গ্রামীণ এলাকায় এবং অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষের কাছে ইন্টারনেটের সুবিধা পৌঁছয়নি বা সীমিত পরিসরে পৌঁছেছে। এই চ্যালেঞ্জ দূর করতেই প্রধানমন্ত্রী Wi-Fi অ্যাকসেস নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস (PM-WANI) প্রকল্প শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছোট দোকানগুলিকে কেন্দ্র করে পাবলিক Wi-Fi নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু ইন্টারনেটের খরচ বেশি হওয়ায় এই দোকানদাররা সস্তায় পরিষেবা দিতে পারছিলেন না। তাই ট্রাই-র এই নতুন নিয়ম সেই বাধা দূর করবে এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের গতিও অনেক গুণ বাড়াবে।
TRAI-এর স্পষ্ট বার্তা
এই সিদ্ধান্তের আগে ট্রাই ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামত চেয়েছিল। কিছু ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা (ISP) এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জানায়, তাদের নিজেদের পরিষেবার দাম নির্ধারণের অধিকার থাকা উচিত। তবে ট্রাই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই পদক্ষেপ কোনোভাবেই কোম্পানির মুনাফার ক্ষতি করার জন্য নয়, বরং এটি দেশের সাধারণ মানুষের কাছে ইন্টারনেট সুলভ ও সহজলভ্য করে তুলতে নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে, একটি নির্দিষ্ট সীমার বেশি চার্জ আদায় করার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ট্রাই-এর (TRAI) এই সিদ্ধান্ত ভারতের ডিজিটাল ভবিষ্যতের দিকে এক সাহসী পদক্ষেপ। এই নিয়ম চালু হলে শুধুমাত্র শহর নয়, গ্রামের মানুষও পাবেন উচ্চগতি সম্পন্ন এবং সস্তা ইন্টারনেট। এতে যেমন ডিজিটাল বৈষম্য কমবে, তেমনই শিক্ষাক্ষেত্র, ব্যবসা ও দৈনন্দিন জীবনের মানোন্নয়নেও বড়সড় পরিবর্তন দেখা যাবে। এখন থেকে চায়ের দোকানেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে, যা দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারের ছবিকে আমূল বদলে দিতে চলেছে।