চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের পর আদিত্য এল-ওয়ানের জন্য প্রস্তুতি সময় শুরু হয়ে গিয়েছে ইসরোর, যা আগামী ২ সেপ্টেম্বর সূর্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। এদিকে, ৩০ আগস্ট, অর্থাৎ আগামীকাল রাখী পূর্ণিমার দিনে আরেকটি জ্যোতির্বিদ্যাগত ঘটনা ঘটতে চলেছে, যা ব্লু মুন (Super Blue Moon) নামে পরিচিত হবে। রাত ৮.৩৭ টায় চাঁদ সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখাবে। ব্লু মুন আসলে কী? ব্লু মুন-এর অর্থ কী? কখন এবং কোন পরিস্থিতিতে এটি ঘটবে?
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সুপার মুন, ব্লু মুনের মতো শব্দ ব্যবহার করেন। কারণ এটি একটি বিরল ঘটনা। আগস্ট ২০২৩ এমন একটি মাস, যখন পূর্ণিমা দু’বার থাকে। ১লা আগস্ট এবং ৩০রা আগস্ট। এটি খুব কমই ঘটে, যখন একই মাসে দুটি পূর্ণিমা থাকে। পূর্ণিমা সাধারণত মাসে একবার হয়। বিজ্ঞানীরা ১ আগস্টের পূর্ণিমাকে সুপার মুন এবং ৩০ আগস্টের পূর্ণিমাকে ব্লু মুন বলে অভিহিত করেছেন। এর পরে, পরবর্তী ব্লু মুন হবে ২০২৬ সালে।
ব্লু মুন প্রতি বছর নয়, আড়াই থেকে তিন বছরে একবার হয়। এসব ঘটনার পেছনের কারণ হলো চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে। এই প্রক্রিয়াটি ২৭ থেকে ২৯.৫ দিন সময় নেয়। মনে প্রশ্ন জাগবে পৃথিবী এক আর চাঁদ এক, তাহলে এত দিনের পার্থক্য কেন? এর কারণ পৃথিবী গোলাকার বা ডিম্বাকৃতি নয়। তবে সাধারণ বিশ্বাস পৃথিবী গোলাকার, এটাও অনেক জায়গায় লেখা পাওয়া যায়। কিন্তু এটি সত্যি না। পৃথিবী গোলাকার বা ডিম্বাকারও নয়। এটা মাঝখানে কোথাও ভিতরে আবার কোথাও বাইরে। অর্থাৎ এটি সমতল।
এ কারণেই চাঁদের চারদিকে ঘুরতে পার্থক্য রয়েছে। প্রতি বছরে ৩৬৫ দিন থাকে। এইভাবে, চাঁদ প্রতি বছর কমপক্ষে ১২ টি আবর্তন করে, তবুও কিছু দিন ১১-১২ দিন বৃদ্ধি পায়। এভাবে আড়াই থেকে তিন বছরে এমন সুযোগ আসে যখন ব্লু মুনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই দিনে চাঁদকে একটু বড়, উজ্জ্বল এবং পরিষ্কার দেখায়। শুধু মেঘ থাকলে অনেক সময় তারা বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন আমরা ব্লু মুনের দৃশ্য উপভোগ করতে পারি না।
চাঁদ থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ৩.৮৪ লাখ কিলোমিটারের একটু বেশি বলা হয়। কিন্তু পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার সময় এই দূরত্ব বহুগুণ বাড়তে ও কমতে দেখা গেলেও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণ দিনেও তা ৩ লাখ ৬৩ হাজার কিলোমিটারের কম আসে না। ১ আগস্ট, ২০২৩-এ, যখন সুপার মুনের অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তখন পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যে দূরত্ব ছিল ৩.৫৭ লাখ কিলোমিটার। এ কারণেই সেদিন চাঁদ স্বাভাবিক পূর্ণিমার চেয়ে উজ্জ্বল দেখা গিয়েছিল। একইভাবে, ব্লু মুনের সময়ও চাঁদ পৃথিবীর কাছাকাছি থাকে এবং এটি সাধারণ পূর্ণিমার চেয়েও বড় দেখায়।
এভাবেই আড়াই থেকে তিন বছরে একবার ব্লু মুন হয়। পূর্ণিমার দিনেও কেন পরিবর্তন হয়? কেন এই ঘটনাগুলি জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে? আগামীকাল ৩০ শে আগস্ট সন্ধ্যায় চাঁদ আরও উজ্জ্বলতার সঙ্গে তুলনামূলকভাবে বড় হতে চলেছে।
