দীপাবলির আগে দেশের বুলিয়ন বাজারে রুপোর ঝড়। প্রতিদিনই রুপোর দাম নিজের রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছচ্ছে। এর ফলে ক্রেতাদের ভিড় যেমন বেড়েছে, তেমনি কারিগর ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন। কারণ, রুপো (Silver Bullion) গয়না তৈরির জন্য সহজে পাওয়া যাচ্ছে না, চার থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। দীপাবলির মৌসুমে সাধারণ সময়ের তুলনায় রুপোর ব্যবসা অন্তত চারগুণ বেড়ে যায়।
কয়েক দিনে অভাবনীয় দামবৃদ্ধি
২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত রুপোর দামে প্রায় ₹৩৩,৫৫০ প্রতি কেজি বৃদ্ধি হয়েছে। গত শুক্রবার সোনার দাম কিছুটা কমলেও রুপোর বাজারে রীতিমতো রোলার কোস্টার দেখা যায়। দিনের শুরুতে দাম কমলেও সন্ধ্যার মধ্যে প্রতি কেজিতে ₹২,০০০ পর্যন্ত উত্থান ঘটে। ফলে রুপোর দাম একেবারে সর্বকালের শিখরে পৌঁছে যায়।
বুলিয়ন ব্যবসায়ীদের মতে, গত দু’সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই রুপোর দামে গড়ে ₹১,৫০০ থেকে ₹২,০০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি হচ্ছে। এর ফলে শুক্রবার রুপোর দাম পৌঁছে যায় প্রায় ₹১.৬৮ লাখ প্রতি কেজি-তে।
বাজারে সরবরাহের ঘাটতি
নিরবচ্ছিন্ন দামবৃদ্ধির ফলে রুপোর সিলির সরবরাহও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মিরাঠের নীল গলি ব্যবসায়ী সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার শুদ্ধ রুপোর সিলি একেবারেই পাওয়া যায়নি। ফলে গয়না তৈরির জন্য কারিগররা সমস্যায় পড়েছেন।
এমসিএক্স (MCX) বাজারে দুপুরে রুপোর দাম ছিল ₹১,৪৭,৭০০ প্রতি কেজি, কিন্তু স্পট মার্কেটে সেটি আরও ₹১৮,০০০ থেকে ₹২০,০০০ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে, সোনার বাজারেও অস্থিরতা থাকায় অনেক বিনিয়োগকারী সোনা থেকে রুপোর দিকে ঝুঁকছেন।
নতুন ক্রেতাদের আগ্রহ
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার রুপোর প্রতি নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মহিলাদের আগ্রহ বেড়েছে। সোনার দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় অনেকেই রুপোর সিক্কা বা অর্ধ কেজি থেকে ১ কেজি ওজনের সিলি কিনছেন। তবে চাহিদা বেশি থাকলেও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় হাতে পেতে বিলম্ব হচ্ছে।
বিনিয়োগের প্রবণতা
মিরাঠ বুলিয়ন ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রদীপ আগরওয়াল জানিয়েছেন, দীপাবলির সময় প্রতিদিন গড়ে ৩০০ কেজি রুপো বাজারে বিক্রি হয়। কিন্তু এবার সরবরাহে ভাঁটা পড়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী মনে করছেন, এখন কেনা রুপো আগামী দিনে আরও ভালো রিটার্ন দেবে। তাই চাহিদা প্রতিদিন বাড়ছে।
আর্থিক দিক
সোনা-রুপো ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিদিন যেভাবে রুপোর দাম বাড়ছে, তাতে অনেকেই আর রুপো বন্ধক রেখে ঋণ দিতে চাইছেন না। কারণ প্রতিদিন মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে, ফলে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ঝুঁকি কমাতে চাইছেন।