গৃহস্থালি বাজেটে স্বস্তি আনবে সংশোধিত জিএসটি হার, বলছে PwC

ভারতীয় পরিবারগুলোর মাসিক বাজেটে কিছুটা স্বস্তি আসতে চলেছে। প্রখ্যাত পরামর্শদাতা সংস্থা প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস (PwC)-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারের জিএসটি (GST) হারে সংশোধনের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে। এর ফলে সামগ্রিক ভোক্তা মনোভাবেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে PwC মনে করছে।

Advertisements

PwC তাদের সমীক্ষা রিপোর্টে জানিয়েছে— “সংশোধিত জিএসটি হার পরিবারগুলোর বাজেটকে আরও সুশৃঙ্খল এবং নিয়ন্ত্রণযোগ্য করে তুলবে।”

খাদ্যমূল্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে:
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রায় ৬৩ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, ক্রমবর্ধমান খাদ্যমূল্য তাদের পরিবারের উপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষত সবজি ও খাদ্যপণ্যের দামের ওঠানামা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের বাজেটে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় জিএসটি হারে পরিবর্তন তাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।

মুদ্রাস্ফীতি রুখতে ভোক্তাদের আচরণে পরিবর্তন:
খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ায় অনেক পরিবার নতুন কৌশল গ্রহণ করছে। রিপোর্ট অনুযায়ী—
প্রায় ৪৪ শতাংশ মানুষ বাল্ক বা পাইকারি হারে বেশি করে কিনছেন, অপর ৪৪ শতাংশ নিজেদের চাহিদার কিছুটা হলেও ঘরে উৎপাদন করার দিকে ঝুঁকছেন— যেমন বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় সবজি চাষ।
এছাড়াও অনেক ভোক্তা খরচ বাঁচাতে ডিসকাউন্ট স্টোর, প্রোমোশনাল অফার ও কুপন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলেছেন।

সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের টান:
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ৭৪ শতাংশ ভোক্তা জানিয়েছেন তাদের খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্যপছন্দ গভীরভাবে সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে বাজারে ঐতিহ্যভিত্তিক ফাংশনাল ফুড (যেমন আমপানা, জিরা-স্বাদযুক্ত পানীয় ইত্যাদি)–এর চাহিদা বাড়তে পারে। PwC মনে করছে, যে সব ব্র্যান্ড এই ধরণের সাংস্কৃতিক নস্টালজিয়া জাগ্রত করতে সক্ষম, তাদের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা মিলবে।

Advertisements

সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় ৩২ শতাংশ মানুষ বলেছেন তারা “আর্থিকভাবে কোনোরকমে সামলাচ্ছেন।” অপরদিকে ৭ শতাংশ ভোক্তা জানিয়েছেন তারা আর্থিকভাবে অস্বস্তিতে রয়েছেন এবং নিয়মিত বিল পরিশোধ করতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

ব্র্যান্ড ও বাজারের জন্য বার্তা:
PwC-এর মতে, শুধুমাত্র জিএসটি হারের সংশোধনই যথেষ্ট নয়। খুচরা ব্র্যান্ড ও সংস্থাগুলোকেও ভোক্তাদের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে হবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “ব্র্যান্ডগুলিকে নিয়মিত প্রোমোশনাল সাইকেল চালু করা এবং লয়্যালটি প্রোগ্রাম জোরদার করতে হবে। এতে স্বল্পমেয়াদি বিক্রি যেমন বাড়বে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে ভোক্তার সঙ্গে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হবে।”

শেষ কথা:
সার্বিকভাবে দেখা যাচ্ছে, জিএসটি সংশোধন কিছুটা হলেও মধ্যবিত্ত পরিবারের বাজেটে স্বস্তি আনতে চলেছে। তবে মুদ্রাস্ফীতি, বিশেষত খাদ্যদ্রব্যের দামের অস্থিরতা, এখনও সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ। এ অবস্থায় ভোক্তাদের নতুন কেনাকাটার অভ্যাস এবং ব্র্যান্ডগুলির কৌশল বাজারের ভবিষ্যৎ চিত্র অনেকটাই নির্ধারণ করবে।