ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম প্রতিদিনের মতোই রয়েছে উর্ধমুখী । সারা বিশ্বে অপরিশোধিত তেলের মূল্য ওঠানামা করা সত্ত্বেও সরকারের সিদ্ধান্তে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে এনেছে, বিশেষ করে যারা ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে চিন্তিত।
দিল্লিতে আজ পেট্রলের দাম লিটার প্রতি ১০৬.০৩ টাকা এবং ডিজেলের দাম ৯৪.২৪। মুম্বাইয়ে পেট্রল বিক্রি হচ্ছে ১১২.১৫ লিটার প্রতি এবং ডিজেল ১০১.৯৪ টাকা লিটার প্রতি। চেন্নাইয়ে পেট্রলের দাম ১০৮.৯৩ টাকা এবং ডিজেল ৯৮.৯৫ টাকা লিটার প্রতি। কলকাতায় পেট্রলের দাম ১০৭.৪৫ এবং ডিজেল ₹৯৭.১২ টাকা লিটার প্রতি। ভুবনেশ্বরে পেট্রল ১০১.০৬ টাকা প্রতি লিটার এবং ডিজেল ৯২.৯১ টাকা প্রতি লিটার যা অন্য শহরগুলির তুলনায় কিছুটা কম। হায়দরাবাদ শহরে আজ পেট্রল ₹১০৭.৪১ প্রতি লিটার যা কলকাতার মতই
ডিজেল ৯৫.৬৫ টাকা প্রতি লিটার।
জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখার পিছনে সরকারের কর কাঠামো অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত অয়েলের দামে সাম্প্রতিক ওঠানামা সত্ত্বেও সরকার এই বাড়তি বোঝা সাধারণ মানুষের উপর না চাপিয়ে তা নিজেই বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকারের বৃহত্তর কৌশলের অংশ।
ভারতীয় অয়েল কর্পোরেশন (IOC), ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (BPCL), এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড (HPCL) এর মতো তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে দাম স্থিতিশীল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সংস্থাগুলি প্রতিদিন আন্তর্জাতিক অপরিশোধিত দর এবং বৈদেশিক মুদ্রার ওঠানামার ভিত্তিতে জ্বালানি তেলের দাম সংশোধন করে। তবে, সরকারের হস্তক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষের উপর দামের প্রভাব কম রাখা সম্ভব হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখা ভারতের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জ্বালানি তেলের দাম পরিবহন খরচকে সরাসরি প্রভাবিত করে, যা পরোক্ষভাবে প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবার মূল্য নির্ধারণ করে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা থেকে দেশ যখন ধীরে ধীরে সেরে উঠছে, তখন জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ভোক্তা ব্যয়কে সমর্থন করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তবে, এই পদ্ধতির দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তেল উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলিতে চলমান সংঘাত এবং মহামারীর পর বৈশ্বিক চাহিদা পুনরুদ্ধারের কারণে আন্তর্জাতিকঅপরিশোধিত তেলের দাম অস্থির হয়ে উঠেছে। যদি আন্তর্জাতিক বাজারে এই অপরিশোধিত তেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে, তাহলে সরকারের পক্ষে জ্বালানি তেলের দাম না বাড়িয়ে এই বাড়তি বোঝা বহন করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
বর্তমানে, ভারতের সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন, কারণ পেট্রোল ও ডিজেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপ অস্থির বিশ্ব অর্থনীতির মধ্যে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করছে। তবে, ভবিষ্যতে পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে সাথে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।