EMI-র দুঃস্বপ্ন এড়াতে পার্সোনাল লোন নেওয়ার আগে জেনে নিন এই ৫টি বিষয়

Personal Loan Traps

দেশে বাড়তে থাকা ব্যয় ও জীবনযাত্রার মান বজায় রাখার চাপে অনেক মানুষ এখন বিভিন্ন প্রকার ঋণের ওপর নির্ভর করছেন। রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (RBI) সর্বশেষ রিপোর্টে দেখা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের গৃহস্থালির ঋণ বেড়েছে প্রায় ১০২%। অন্যদিকে, এই সময়ের মধ্যে আর্থিক সম্পদের বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪৮%। অর্থাৎ, মানুষ আয় বা সম্পদের তুলনায় দ্রুত ঋণের জালে জড়াচ্ছে।

Advertisements

ঋণ নিন শুধুমাত্র প্রয়োজনের জন্য:
চিকিৎসা, বাড়ির সংস্কার বা শিক্ষার মতো জরুরি খরচের সময় পার্সোনাল লোন নেওয়া যৌক্তিক হতে পারে। কিন্তু বিলাসবহুল জীবনযাপন বজায় রাখা বা অস্থায়ী ইচ্ছা পূরণের জন্য ঋণ নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। এতে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক চাপ তৈরি হয় এবং ভবিষ্যতের সঞ্চয় কমে যায়।

   

গৃহঋণকে অগ্রাধিকার দিন, অন্য খরচে সাবধান হন:
বাড়ি কেনার জন্য লোন নেওয়া একপ্রকার বিনিয়োগ, কিন্তু অন্যান্য খরচের জন্য ঋণ নেওয়ার আগে ভাবুন—এটি সত্যিই কি প্রয়োজনীয়? শিক্ষা, চিকিৎসা বা জরুরি জীবনের প্রয়োজনে লোন নেওয়া যুক্তিযুক্ত, কিন্তু বিলাসিতার জন্য নয়।

যত প্রয়োজন, ততটাই ধার নিন:
ধরুন, আপনার প্রয়োজন ২ লক্ষ টাকা, কিন্তু ব্যাংক অফার করছে ২.৫ লক্ষ। বাড়তি টাকার প্রলোভনে পড়বেন না। কারণ যত বেশি ঋণ নেবেন, ততই বাড়বে EMI ও সুদের বোঝা। সবসময় প্রয়োজন অনুযায়ীই লোনের পরিমাণ নির্ধারণ করুন।

Advertisements

সুদের হার তুলনা করুন:
সব ঋণদাতার সুদের হার এক নয়। একাধিক ব্যাংক বা NBFC-র অফার আগে যাচাই করুন। এতে কম সুদের হারে ঋণ পাওয়া সম্ভব, ফলে EMI ও মোট সুদের বোঝাও কমবে।

সঞ্চয়ের বিপরীতে ঋণ বিবেচনা করুন:
যদি আপনার কাছে ফিক্সড ডিপোজিট বা মিউচুয়াল ফান্ড থাকে, তবে সেই সম্পদের বিপরীতে ঋণ নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন। এসব “সিকিউরড লোন”–এর সুদের হার পার্সোনাল লোনের তুলনায় অনেক কম হয়, কারণ এগুলোর বিপরীতে ব্যাংকের নিরাপত্তা থাকে।

সতর্ক থাকুন, বুদ্ধিমানের মতো সিদ্ধান্ত নিন:
অর্থনৈতিক প্রয়োজন মেটাতে ঋণ নেওয়া খারাপ নয়, কিন্তু অযথা ধার করলে তা আর্থিক ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। তাই প্রয়োজন, সক্ষমতা ও সুদের হার বিচার করে তবেই সিদ্ধান্ত নিন—নইলে EMI-র চাপ আপনার শান্তি, ঘুম ও ভবিষ্যৎ দুটোই কেড়ে নিতে পারে।