‘ওরেঞ্জ সিটি’-তে পতঞ্জলির মেগা ফুড অ্যান্ড হার্বাল পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা

বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যবসায়ী দুনিয়ায় ইতিমধ্যেই পরিচিত নাম পতঞ্জলি। এবার বড় ধরণের বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারতের নাগপুরে একটি মেগা ফুড অ্যান্ড হার্বাল পার্ক শুরু করতে চলেছে পতঞ্জলি।…

Patanjali to start mega food and herbal park

বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যবসায়ী দুনিয়ায় ইতিমধ্যেই পরিচিত নাম পতঞ্জলি। এবার বড় ধরণের বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারতের নাগপুরে একটি মেগা ফুড অ্যান্ড হার্বাল পার্ক শুরু করতে চলেছে পতঞ্জলি। এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডের সাথে প্রক্রিয়াজাতকরণে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠবে। নাগপুরের এমআইএইচএএন এলাকায় এই প্রকল্পটি চালু করা হবে, যার নামকরণ করা হয়েছে “পতঞ্জলি মেগা ফুড অ্যান্ড হার্বাল পার্ক”।

বিনিয়োগ ও উৎপাদনের পরিমাণ:

kolkata24x7-sports-News

   

পতঞ্জলি এই প্রকল্পে ১৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। তাদের এই উদ্যোগে নাগপুরের ফল এবং সবজির প্রসেসিং এর জন্য নতুন একটি প্লান্ট স্থাপন করা হবে। যা মূলত বিভিন্ন ধরনের ফল এবং সবজি প্রক্রিয়া করবে। এই প্ল্যান্টে প্রতিদিন ৮০০ টন ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ হবে এবং মূলত রস, রস কনসেন্ট্রেট, পলপ, পেস্ট এবং পিউরি তৈরি করা হবে।

নাগপুরের “ওরেঞ্জ সিটি” নামে পরিচিত, শহরটি সাইট্রাস ফলের জন্য বিখ্যাত, যেমন কমলা, কিন্নো, মিষ্টি নিম্বু, লেবু ইত্যাদি। পতঞ্জলি সাইট্রাস প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টটি নাগপুরে স্থাপন করেছে, যা প্রতি দিন ৮০০ টন ফল প্রক্রিয়া করতে সক্ষম হবে।

ট্রপিক্যাল ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ:

এই নতুন প্ল্যান্টে আরও বিভিন্ন ধরনের ট্রপিক্যাল ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ হবে। যেমন-

৬০০ টন আমলা

৪০০ টন আম

২০০ টন পেয়ারা

২০০ টন পেঁপে

২০০ টন আপেল

২০০ টন ডালিম

২০০ টন স্ট্রবেরি

২০০ টন প্লাম

২০০ টন নাশপাতি

৪০০ টন টমেটো

৪০০ টন লাউ

৪০০ টন তিতিকুমড়ো

১৬০ টন গাজর

১০০ টন অ্যালো ভেরা

টেট্রা প্যাক ইউনিট ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি:

নাগপুরের পতঞ্জলি ফ্যাক্টরিতে একটি টেট্রা প্যাক ইউনিট স্থাপন করা হবে, যা কোনো প্রকার কেমিক্যাল বা প্রিজারভেটিভ ব্যবহার ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে পণ্য প্যাক করবে। এটি স্বাস্থ্য সচেতন গ্রাহকদের জন্য প্রিমিয়াম পণ্য সরবরাহ করবে।

ফসলের অপচয় রোধ:

পতঞ্জলির আরেকটি বিশেষ দিক হলো তারা তাদের উৎপাদিত উপকরণের অপচয় রোধ করে। কমলার রস বের করার পর কমলার খোসারও ব্যবহার করা হবে। কমলার খোসা থেকে কোল্ড প্রেস অয়েল তৈরি করা হবে, যা বাজারে চাহিদা রয়েছে। কমলার খোসা দিয়ে কসমেটিক্স এবং অন্যান্য মূল্যবান পণ্য তৈরি হবে। এর পাশাপাশি কমলার গুঁড়োও তৈরি করা হবে, যা বিভিন্ন সৌন্দর্য পণ্য তৈরিতে ব্যবহার হবে।

পতঞ্জলি আটা মিলের স্থাপনা:

এছাড়া পতঞ্জলি তাদের আটা মিলও নাগপুরে স্থাপন করেছে। এখানে প্রতি দিন ১০০ টন গম প্রক্রিয়া করা হবে এবং তা পতঞ্জলির বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে সরবরাহ করা হবে। পতঞ্জলি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে গম কিনে থাকে।

পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়:

এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে সাইট্রাস ফল এবং টেট্রা প্যাক প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু হবে। ইতিমধ্যে ১,০০০ টন মিষ্টি লেবু প্রক্রিয়া করা হয়েছে। এবং কমলা প্রক্রিয়াকরণের কাজও শুরু হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য ট্রপিক্যাল ফলের জন্য সমস্ত যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হচ্ছে।

পতঞ্জলির এই মেগা ফুড অ্যান্ড হার্বাল পার্কটি শুধু একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ নয়, বরং এটি দেশের কৃষি খাত ও খাদ্য শিল্পের উন্নতিতে এক বড় ভূমিকা পালন করবে। বিশেষত, কৃষকদের কাছে সরাসরি শস্য কেনার মাধ্যমে পতঞ্জলি কৃষি অর্থনীতির বিকাশেও অবদান রাখবে।