শিল্প-রাজধানী হতে চলেছে নিউটাউন, গড়ছে ২৫ একরের বিশাল বিশ্ব অঙ্গন

নিউটাউনের (Newtown) মুকুটে নতুন পালক—আবারও এক অনন্য উদ্যোগে বাংলাকে গর্বিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইকো পার্ক, মাদার ওয়াক্স মিউজিয়াম, বিশ্ববাংলা গেটের মতো প্রকল্পের সফলতার পর…

Newtown , Kolkata

নিউটাউনের (Newtown) মুকুটে নতুন পালক—আবারও এক অনন্য উদ্যোগে বাংলাকে গর্বিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইকো পার্ক, মাদার ওয়াক্স মিউজিয়াম, বিশ্ববাংলা গেটের মতো প্রকল্পের সফলতার পর এবার নিউটাউনে গড়ে উঠতে চলেছে এক বিশাল আন্তর্জাতিক মানের পার্ক, যার নাম ইন্টারন্যাশনাল ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড এন্টারটেনমেন্ট কালচারাল পার্ক (IITEC)—বাংলায় নাম রাখা হয়েছে বিশ্ব অঙ্গন।

২৫ একর জমির ওপর নির্মিত হতে চলেছে এই বিশাল প্রকল্প, যা রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি, বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক জগতকে এক নতুন দিশা দেখাবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এই প্রকল্পটি হবে পিপিপি (PPP) মডেলে—অর্থাৎ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে HIDCO-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই পার্ক তৈরি হবে। এখানে একদিকে যেমন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি নিজেদের অফিস স্থাপন করতে পারবে, তেমনি অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মানের কনসার্ট, এক্সজিবিশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র উৎসব ইত্যাদির আয়োজনের সুযোগ থাকবে।

   

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই পার্কটি ভবিষ্যতে বাংলার গর্ব হয়ে উঠবে। বিশ্বজুড়ে যাঁরা টেকনোলজি, এন্টারটেনমেন্ট কিংবা কালচারে যুক্ত, তাঁদের কাছে এটি হবে এক নতুন কেন্দ্র। এখানে থাকবে কনফারেন্স সেন্টার, মাল্টিপারপাস ভেন্যু, এক্সিবিশন হল, ওপেন এয়ার থিয়েটার সহ আরও অনেক কিছু। কনসার্ট ইকোনমি এখন বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই পরিকল্পনা।”

এই পার্কের মাধ্যমে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গ আন্তর্জাতিক মঞ্চে তার উপস্থিতিকে আরও মজবুত করতে পারবে। তথ্যপ্রযুক্তি ও বিনোদনের সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামোর সুবিধা পাবে। পাশাপাশি, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে। রাজ্যের ছেলেমেয়েরা তথ্যপ্রযুক্তি, সংগীত, সিনেমা, থিয়েটার, ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের কাজের সুযোগ পাবে।

Advertisements

বিশ্ব অঙ্গন-এ থাকবে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কনফারেন্স রুম, স্টার্টআপ ইনকিউবেশন সেন্টার, ডিজিটাল গ্যালারি এবং আরও নানা নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক উদ্ভাবনের স্থান। এটি হবে এমন এক কেন্দ্র যেখানে প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধনে তৈরি হবে এক নতুন ভাবনা, নতুন সম্ভাবনা।

নিউটাউনের মতো পরিকল্পিত শহরে এই ধরনের এক বৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রকল্প রাজ্যের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের রূপরেখাকে আরও উজ্জ্বল করবে। ইতিমধ্যেই নিউটাউন আইটি হাব, ফিনটেক হাব, ও ইকো পার্ক পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বিশ্ব অঙ্গন—যা শুধু এক নতুন প্রজেক্ট নয়, বরং বাংলার সৃজনশীলতা, আধুনিকতা এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির এক প্রতীক।

এই পার্কের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যাশা অনুযায়ী আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এটি হয়ে উঠবে আন্তর্জাতিক মানের একটি দৃষ্টান্ত। “বাংলার ছেলেমেয়েরা যাতে নিজের রাজ্যেই বিশ্বমানের সুযোগ পায়, তার জন্যই এই প্রয়াস,”—এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। বিশ্ব অঙ্গন শুধু এক নতুন স্থাপনা নয়, এটি বাংলার আত্মবিশ্বাস, উন্নয়ন এবং বিশ্বমঞ্চে এগিয়ে চলার এক অনন্য নিদর্শন।