পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হল গৌতম আদানি। গোটা বিশ্ব এখন তাকে এক নামে চেনে। তার নাম গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লেও তার পরিবারের নাম খুব একটা সামনে আসে না। তার কারণ হল এনারা খুব বেশি লাইম লাইটে থাকতে পছন্দ করেন না। তবে প্রবাদ বাক্য অনুযায়ী প্রতিটি সফল পুরুষের পেছনে একজন নারীর হাত থাকে। সেক্ষেত্রে গৌতম আদানির সুখী পরিবারের নেপথ্যে একজন নারীর ভূমিকা রয়েছে। তিনি শিল্পপতির ঘরণী প্রীতি আদানি। ধনকুবেরের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও খুবই সাদামাটা জীবন যাপন করেন প্রীতি। শাড়ি ও সাজে সাধারণ থাকতে তিনি পছন্দ করেন।
গৌতম এবং প্রীতির বিয়ে হয়েছিল সম্বন্ধ করে। পরবর্তীকালে দুই পরিবারের বড় ভাই তাদের দুজনকে এক করেছিলেন। প্রীতিকে প্রথম দেখে বেশ লাজুক ছিলেন গৌতম। এক সাক্ষাৎকারে আদানি বলেছিলেন আমি একজন অশিক্ষিত আর প্রীতি চিকিৎসক। সুতরাং একটু তো বেমানান বটেই। ১৯৬৫ সালে মুম্বাইতে এক গুজরাটি পরিবারে জন্ম হয় প্রীতির। আমেদাবাদ থেকে দন্ত্য চিকিৎসায় স্নাতক করেন প্রীতি।
তবে আদানির সঙ্গে বিয়ে করার পর নিজের পেশা নিয়ে তিনি আর কিছু ভাবেননি। নিজের পেশা ছেড়ে মন দিয়েছেন সংসারে। নিজের চিকিৎসক পেশা ছেড়ে যেমন সংসারে মন দিয়েছেন তেমনি স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাবসাও সামলিয়েছেন। ১৯৯৬ সালে আদানি ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন হন তিনি। স্ত্রীর নেতৃত্বে তার কোম্পানিতে যে উন্নতি হয়েছে তিনি এ কথা বহুবার বহু জায়গায় বলেছেন।
তিনি জানান আদানী ফাউন্ডেশন যখন তৈরি হয়েছিল সেখানে মাত্র দুজন কর্মচারী ছিল। অথচ আজ দেশ জুড়ে প্রতিবছর এই ফাউন্ডেশন ৩২ লক্ষ মানুষকে সাহায্য করছে। এর নেপথ্যে প্রীতির অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছেন আদানি। একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে অনেক জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে প্রীতি আদানি।
এছাড়াও আদানি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দারিদ্র ক্ষুধা ও অসহযোগী মানুষদের জন্য কাজ করে চলেছেন প্রীতি আদানি। করোণার মত অতি মহামারীর সময়ও প্রীতি সহযোগিতা করেছে। গরিবদের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিয়েছিলেন। ২০০১ সালে গুজরাটে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ২০,০০০ মানুষের প্রাণহানির পর দরিদ্রদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করে প্রীতি। এক কথায় বলতে গেলে দান করার ক্ষেত্রে কোনও রকম সংকোচ করেনা প্রীতি। এত কাছের মধ্যেও তিনি নিজের সংসারের প্রতি যত্ন নিতে ভোলেন না। তাদের দুই ছেলের মধ্যে একজন করণ আদানি ও আরেকজন জিৎ আদানি।