ভারতের কোটি কোটি পেনশনভোগীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি হলো ‘জীবন প্রমাণপত্র’ বা Jeevan Pramaan (Digital Life Certificate)। প্রতি বছর পেনশনভোগীদের এই জীবন প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়, যাতে তারা জীবিত আছেন তা নিশ্চিত করা যায় এবং পেনশন তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হতে থাকে। আগে এই সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার জন্য পেনশনভোগীদের নিজে উপস্থিত হয়ে ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে যেতে হতো, তবে এখন সরকার ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।
জীবন প্রমাণপত্র কী এবং কেন প্রয়োজন?
‘জীবন প্রমাণপত্র’ মূলত একটি বায়োমেট্রিক ভিত্তিক আধার-নির্ভর ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট, যা পেনশনভোগীদের জীবিত থাকার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দেশে প্রায় এক কোটিরও বেশি পরিবার পেনশনভোগী, ফলে এই সনদ পেনশন ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
কবে জমা দিতে হবে জীবন প্রমাণপত্র? Jeevan Pramaan Digital Life Certificate
২০২৫ সালের জন্য পেনশনভোগীদের ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জীবন প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। তবে ৮০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রবীণ নাগরিকরা ১ অক্টোবর থেকেই এটি জমা দিতে পারবেন, যাতে তাদের পেনশন প্রদানে কোনো বিঘ্ন না ঘটে।
অনলাইনে জীবন প্রমাণপত্র তৈরির পদ্ধতি:
জীবন প্রমাণপত্র তৈরির দুটি ধাপ রয়েছে —
ধাপ ১: বায়োমেট্রিক ডিভাইস রেজিস্ট্রেশন
১. Jeevan Pramaan ওয়েবসাইটে যান।
২. আধার নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিন।
৩. মোবাইলে প্রাপ্ত OTP যাচাই করুন।
৪. নাম ও ইমেল আইডি লিখে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আইরিস স্ক্যান করুন।
৫. যাচাই সম্পন্ন হলে ডিভাইস রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাবে।
ধাপ ২: ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট জেনারেট করা
১. https://jeevanpramaan.gov.in এ লগইন করুন।
২. আধার নম্বর, মোবাইল নম্বর, পেনশন টাইপ ও ব্যাংক তথ্য দিন।
৩. পুনর্বিবাহ বা চাকরিতে পুনর্নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করুন।
৪. বায়োমেট্রিক যাচাই সম্পন্ন হলে জীবন প্রমাণপত্র তৈরি হবে।
৫. SMS-এ সার্টিফিকেট আইডি পাওয়া যাবে এবং এটি অনলাইন রিপোজিটরিতে সংরক্ষিত থাকবে।
জীবন প্রমাণপত্র জমা দেওয়ার উপায়:
১. অফলাইন: নিকটবর্তী ব্যাঙ্ক শাখা বা CSC কেন্দ্রে গিয়ে জমা দিতে পারেন। ঘরে বসে জমা দিতে চাইলে India Post Payments Bank (IPPB) হোম সার্ভিস প্রদান করে।
২. অনলাইন: Jeevan Pramaan পোর্টাল থেকে সরাসরি ডিজিটাল সার্টিফিকেট জমা দেওয়া যায়।
৩. UMANG অ্যাপের মাধ্যমে: Google Play Store থেকে UMANG অ্যাপ ডাউনলোড করে ‘Jeevan Pramaan’ সার্ভিসে গিয়ে সার্টিফিকেট জেনারেট করা যায়।
শেষ কথা:
এই ডিজিটাল প্রক্রিয়ার ফলে পেনশনভোগীদের আর বারবার অফিসে যেতে হয় না। সরকারের এই উদ্যোগে পেনশন প্রদানে আরও স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আসছে, যা লক্ষাধিক প্রবীণ নাগরিকের জীবনকে সহজতর করছে।


