ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন যাচাইয়ের সময়সীমা ৩০ দিন, জানুন পদ্ধতি

২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দেওয়ার সময়সীমা ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে বহু করদাতা রিটার্ন দাখিল করে ফেলেছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, রিটার্ন…

12 Essential Documents You Must Check Before Filing Your Income Tax Return

২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দেওয়ার সময়সীমা ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে বহু করদাতা রিটার্ন দাখিল করে ফেলেছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, রিটার্ন ফাইল করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। সেটি অবশ্যই ৩০ দিনের মধ্যে ই-ভেরিফাই করতে হবে, নাহলে সেটি ‘অবৈধ’ বা invalid বলে গণ্য হবে।
অর্থাৎ, ই-ফাইলিং পোর্টালে রিটার্ন আপলোডের পর ই-ভেরিফিকেশন একটি অপরিহার্য ধাপ, যেটি পূর্ণ না হলে রিটার্ন কার্যকর ধরা হবে না। সুতরাং, রিটার্ন ফাইল করেই নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকলে চলবে না।

ই-ভেরিফিকেশন কী এবং কেন জরুরি?
আয়কর দফতর জানিয়েছে, আয়কর রিটার্ন ফাইল করার ৩০ দিনের মধ্যে যদি তা ই-ভেরিফাই না করা হয়, তাহলে সেই রিটার্ন আইনত গ্রহণযোগ্য নয়। ফলে করদাতা পরবর্তী সময়ে কর ফেরত (refund), প্রসেসিং কিংবা কোনো ধরনের দাবি করতে পারবে না।
ই-ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া রিটার্ন যাচাই করে তা গ্রহণযোগ্যতা প্রদান করে। এটি সম্পন্ন হলে, আয়কর দফতর একটি অ্যাকনলেজমেন্ট (acknowledgement) ইস্যু করে যা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

   

ই-ভেরিফিকেশনের পদ্ধতি কী কী?
বর্তমানে ই-ভেরিফিকেশন করা খুবই সহজ এবং তা অনলাইনেই কয়েক মিনিটে সম্পন্ন করা যায়। নিচে কয়েকটি পদ্ধতি দেওয়া হল:
১. আধার OTP এর মাধ্যমে ই-ভেরিফিকেশন:
এটি সবচেয়ে সহজ এবং দ্রুত পদ্ধতি।
যদি আপনার মোবাইল নম্বর আধারের সঙ্গে লিঙ্ক থাকে, তবে এই পদ্ধতিতে ই-ভেরিফাই করা সম্ভব।

কীভাবে করবেন:
www.incometax.gov.in এ লগ ইন করুন।
‘e-File’ মেনু থেকে ‘Income Tax Returns’ নির্বাচন করুন।
এরপর ‘e-Verify Return’ নির্বাচন করে ‘Aadhaar OTP’ বেছে নিন।
মোবাইলে আসা OTP প্রবেশ করান।
সিস্টেম তখনই কনফার্মেশন দেখাবে ও মেইলে জানাবে।

২. নেট ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে:
আপনি আপনার নেট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে ‘e-Verify Income Tax Return’ অপশন ব্যবহার করতে পারেন।
অধিকাংশ ব্যাংকের ট্যাক্স সেকশনেই এই অপশন থাকে।

Advertisements

৩. ইলেকট্রনিক ভেরিফিকেশন কোড (EVC):
আপনি প্রি-ভ্যালিডেটেড ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট, বা এটিএম থেকে EVC জেনারেট করে ই-ভেরিফিকেশন করতে পারেন।
৪. ডিজিটাল সিগনেচার সার্টিফিকেট (DSC):
DSC থাকলে সেটির মাধ্যমেও ই-ভেরিফিকেশন সম্ভব।
৫. ফিজিক্যাল মেল করে:
আপনি চাইলে ITR-V অ্যাকনলেজমেন্ট ফর্ম ডাউনলোড করে সই করে পোস্টেও পাঠাতে পারেন।
ঠিকানা:
Centralized Processing Center, Income Tax Department, Bengaluru – 560500
তবে, এই পদ্ধতিতে প্রসেসিং হতে অনেকদিন সময় লাগে। সেজন্য দফতর অনলাইন ই-ভেরিফিকেশন বেছে নিতে পরামর্শ দিচ্ছে।

৩০ দিনের মধ্যে না করলে কী হবে?
যদি আপনি ৩০ দিনের মধ্যে ই-ভেরিফিকেশন না করেন, তাহলে সেই রিটার্ন “Invalid” বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ, আপনার দাখিল করা রিটার্ন কাগজে-কলমে থাকলেও তা কার্যকর হবে না। এর ফলে:
রিফান্ড পাবেন না
রিটার্ন পুনরায় জমা দিতে হতে পারেবিলম্বজনিত জরিমানা দিতে হতে পারে
তবে, আপনি চাইলে “Condonation of Delay” এর জন্য অনুরোধ জানাতে পারেন। এটির জন্য আপনাকে যথাযথ কারণ দেখিয়ে ইনকাম ট্যাক্স পোর্টালেই একটি আবেদন জমা দিতে হবে। দফতর যদি আপনার আবেদন গ্রহণ করে, তবে রিটার্ন বৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

করদাতাদের জন্য বিশেষ পরামর্শ:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিটার্ন ফাইল করার পর ই-ভেরিফিকেশন বিলম্ব না করাই ভালো। কারণ অনেক সময় OTP না আসা, সার্ভার সমস্যা কিংবা অন্যান্য প্রযুক্তিগত কারণে বিলম্ব হতে পারে। তাই আগে ভাগে কাজ সম্পন্ন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

আয়কর রিটার্ন শুধু জমা দিলেই দায়িত্ব শেষ নয়, সেটি ৩০ দিনের মধ্যে ই-ভেরিফিকেশন করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধার OTP, নেট ব্যাঙ্কিং কিংবা EVC – যেকোনো উপায়ে এটি দ্রুত করে ফেলুন। ফেলে রাখলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
কর ফাইলিং একটি নাগরিক দায়িত্ব, এবং ই-ভেরিফিকেশন সেই দায়িত্বের একটি অঙ্গ। কাজেই সময় থাকতেই কাজ শেষ করে ফেলুন, আর নিশ্চিন্তে থাকুন।