ভারত ও ইসরায়েল তাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক (India Israel trade) আরও দৃঢ় করতে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ শমুয়েল আব্রামজোন বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ চুক্তি সই হয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে একটি বাণিজ্য চুক্তি সই হতে পারে।
সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, নয়াদিল্লিতে ভারতীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ও ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ একটি দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি (BIA) সই করেন। এই চুক্তি দুটি দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং ব্যবসায়ীদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বচ্ছ পরিবেশ নিশ্চিত করবে। ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি ভারতের নতুন বিনিয়োগ চুক্তি মডেল অনুসরণ করে প্রথম OECD সদস্য দেশ হিসেবে সই করা হয়েছে।
শমুয়েল আব্রামজোন বলেন, “আমরা একটি বিনিয়োগ চুক্তি সই করেছি, এবং পরবর্তী পদক্ষেপ হবে একটি বাণিজ্য চুক্তি। ভারত এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি, তবে আমরা আলোচনা শুরু করেছি। সম্পর্কগুলো ভালো এবং আশা করি এটি শীঘ্রই বাস্তবায়িত হবে।” তিনি আরও বলেন, “দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বাণিজ্য সম্পর্ক চমৎকার এবং ইতিবাচক প্রবণতা দেখাচ্ছে।”
ইসরায়েল ও ভারত উভয় দেশই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক নীতির কারণে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। আব্রামজোন বলেন, “আমরা উভয়েই উচ্চ শুল্কের সম্মুখীন হচ্ছি, তবে আমি বিশ্বাস করি এই সমস্যা সমাধান হবে। আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েল ও ভারতের সম্পর্কের প্রতি আস্থা রাখি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ধৈর্য ধরতে হবে, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।”
আব্রামজোন ভারতের সেমিকন্ডাক্টর মিশনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “ইসরায়েল সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে বড় খেলোয়াড় নয়, তবে গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষেত্রে আমাদের শক্তি রয়েছে।” তিনি বলেন, “সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে যেকোনো অগ্রগতি ইসরায়েলের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হবে।”
ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০২৪ সালে ৩.৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই বিনিয়োগ চুক্তি দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও গভীর করবে। আব্রামজোন আশা প্রকাশ করেছেন যে, এই চুক্তি ভবিষ্যতে একটি পূর্ণাঙ্গ ফ্রি ট্রেড চুক্তির দিকে নিয়ে যাবে, যা দুটি দেশের অর্থনীতির জন্য লাভজনক হবে।
ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে এই নতুন অর্থনৈতিক সম্পর্ক দুটি দেশের জন্য একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হতে পারে, যা কেবল বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেই নয়, প্রযুক্তি, নিরাপত্তা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে।