ভারতের খুচরা মুদ্রাস্ফীতি কমে ৩.৬১ শতাংশ, সবজির দাম হ্রাস

ভারতের খুচরা মুদ্রাস্ফীতি, যা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) দ্বারা পরিমাপ করা হয়, ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মাসে সাত মাসের সর্বনিম্ন ৩.৬১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা জানুয়ারিতে ছিল…

india-retail-inflation-drops-to-3-61-vegetable-prices-decline

short-samachar

ভারতের খুচরা মুদ্রাস্ফীতি, যা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) দ্বারা পরিমাপ করা হয়, ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মাসে সাত মাসের সর্বনিম্ন ৩.৬১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৪.৩১ শতাংশ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে খুচরা মুদ্রাস্ফীতির হার ৩.৬১ শতাংশে নেমেছে, যা জানুয়ারির পুনর্বিবেচিত ৪.২৬ শতাংশের থেকেও কম। এটি জুলাই ২০২৪ পরবর্তী সবচেয়ে কম মুদ্রাস্ফীতি।

   

ফেব্রুয়ারি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৩.৭৫ শতাংশে নেমে এসেছে, যা জানুয়ারির পুনর্বিবেচিত ৫.৯৭ শতাংশের থেকে কম। সবজির দাম ১.০৭ শতাংশ কমে গেছে, যেখানে জানুয়ারিতে ছিল ১১.৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি। অন্যদিকে, শস্যের দাম ৬.১ শতাংশ বেড়েছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৬.২৪ শতাংশ। মসলার দাম ০.৩৫ শতাংশ কমেছে, যা জানুয়ারিতে ২.৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।

মুদ্রাস্ফীতির নিম্নগতির কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা সবজির দাম কমার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তবে শস্য এবং ডাল জাতীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে খাদ্য দ্রব্যের দাম কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও, গত বছরের তুলনায় পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব মুদ্রাস্ফীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

এদিকে, ভারতের শিল্প উৎপাদন জানুয়ারি ২০২৫ মাসে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মূলত উৎপাদন খাতের শক্তিশালী কর্মক্ষমতার কারণে সম্ভব হয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর ২০২৪ মাসের শিল্প উৎপাদনের হার সংশোধিত করে ৩.৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে, যা আগে ৩.২ শতাংশ ছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে শিল্প উৎপাদন ৪.২ শতাংশ বেড়েছিল।

জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (NSO) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি ২০২৫ মাসে উৎপাদন খাতের উৎপাদন ৫.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩.৬ শতাংশ। তবে, খনি উৎপাদনের বৃদ্ধি কিছুটা ধীর হয়ে ৪.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত বছর ছিল ৬ শতাংশ। একই সময়ে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের বৃদ্ধির হার কমে ২.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত বছর ছিল ৫.৬ শতাংশ।

এছাড়া, এপ্রিল থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শিল্প উৎপাদন (IIP) ৪.২ শতাংশ বেড়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের ৬ শতাংশ বৃদ্ধির তুলনায় কিছুটা ধীর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০২৫ সালের প্রথম মাসগুলোতে ভারতের শিল্প খাত কিছুটা কম প্রবৃদ্ধি দেখাতে পারে, তবে সার্বিকভাবে এটি দেশের অর্থনীতির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং পরবর্তী সময়ে আরও উন্নতির সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে খাদ্যসামগ্রী এবং শিল্প উৎপাদনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সরকারের সঠিক নীতি গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, তবে উৎপাদন খাতের বৃদ্ধি আরও শক্তিশালী করতে আরও কিছু উদার অর্থনৈতিক পদক্ষেপের প্রয়োজন।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকা সত্ত্বেও, খাদ্য পণ্যের দাম বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। যদিও উৎপাদন খাতের বিকাশ ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, তবুও বিশ্বের বাজারে পরিবর্তিত পরিস্থিতি এবং জাতীয় চাহিদার চাপ সবকিছুতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

এভাবে, ভারতের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখলেও কিছু ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, যাতে দেশটি সামগ্রিকভাবে সুষম উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে।