হাইওয়ে (Highway) রক্ষণাবেক্ষণে বিরাট পরিবর্তন আসতে চলেছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (NHAI) রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি বৈপ্লবিক প্রযুক্তি চালু করার পরিকল্পনা করছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন ধরণের অ্যাসফল্ট ব্যবহার করা হবে। যার ফলে একটি রাস্তা নিজে থেকেই ‘মেরামত’ হয়ে যাবে। এই উপাদানটি ইস্পাত ফাইবার এবং বিটুমিনের সঙ্গে মেশানো হবে।
রাস্তায় কোনও ফাঁক দেখলেই, তা ঢেকে দেওয়ার জন্য বিটুমিন ছড়িয়ে পড়বে। একই সঙ্গে সেই গর্ত পূরণ করবে ইস্পাতের থ্রেড (সুতো)। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া-র দাবি, এর ফলে রাস্তায় যত্রতত্র যে গর্ত তৈরি হয়, সেগুলি নিজে থেকেই বুজে যাবে। ফলে গর্ত থেকে যে সড়ক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটে, তাও কমে আসবে।
তবে রাস্তার গর্ত বা ফাঁক ঢাকতে এবং ‘মেরামত’ করতে কতক্ষণ সময় লাগবে তা এখনও জানা যায়নি। এক উচ্চপদস্থ সরকারিক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থাটি খুব একটা প্রচলিত নয়। তবে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। রাস্তার স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করতে আমরা এই অপ্রচলিত ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবছি। আশা করি, এই প্রযুক্তি অত্যন্ত জনপ্রিয় হবে।
তবে এই প্রযুক্তি চালু হওয়ার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পটির ব্যয়-সুবিধা বিশ্লেষণ করবে। তবে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া আত্মবিশ্বাসী যে নতুন প্রযুক্তির ফলে রাস্তার আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া গর্তের কারণে সৃষ্ট ট্রাফিক জটিলতাও অনেকটা কমিয়ে আনবে। যানবাহনের গতি আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাবে।
অ্যাসফল্ট একটি টেকসই উপাদান যা বিমানবন্দরের রানওয়ে, পার্কিং লট, ড্রাইভওয়ে, ফুটপাথ এবং হাইওয়ে নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত হয়। সবচেয়ে বড় কথা অ্যাসফল্ট হল পরিবেশবান্ধব উপাদান, এটি মসৃণ যাত্রা উপহার দিয়ে থাকে। বাইন্ডার এবং ফিলারের মিশ্রণ দ্বারা এটি তৈরি করা হয়। এর সঙ্গে অন্যান্য কিছু উপাদানও মেশানো হয়।
এরপর বিশেষ ট্রাক গরম অ্যাসফল্ট মিশ্রণটি পছন্দসই স্থানে পৌঁছে দেয়। তারপর ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এই মিশ্রণ ছড়িয়ে দিয়ে ঠান্ডা করা হয়। এই পরবর্তীতে বিটুমিন ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, এর ফলে অ্যাসফল্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রাস্তায় বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়। নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (NHAI) একটি সরকারি সংস্থা, যা ভারতের জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।