সপ্তাহের শুরুতেই ভারতের সোনার (Gold Price) বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে। সোমবার, ১৪ এপ্রিল, আম্বেদকর জয়ন্তী, বিশু ও তামিল নববর্ষ উপলক্ষে সোনার দাম কমে গেছে। ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার পুনরায় বাজার খুলতে চলেছে তিন দিনের ছুটির পর। এই দিনে ভারতের বাজারে ২৪ ক্যারেট, (Gold Price) ২২ ক্যারেট (Gold Price) ও ১৮ ক্যারেট সোনার দাম(Gold Price) কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা অনেকটাই নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক বাজারের দামের উপর, বিশেষ করে Comex মার্কেটের সোনার দামের ওঠানামার উপর।
সোনার বর্তমান দাম:
১৪ এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দাম (Gold Price) কমে হয়েছে ৯,৫৫,১০০, অর্থাৎ প্রতি ১০ গ্রামে দাম কমেছে ১৬০ করে, যা বর্তমানে ৯৫,৫১০। একইভাবে, ১০০ গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনার দাম ৮,৭৫,৫০০, অর্থাৎ প্রতি ১০ গ্রামে ৮৭,৫৫০। ১৮ ক্যারেট সোনার দামও (Gold Price) ১,২০০ হ্রাস পেয়ে ১০০ গ্রামে ৭,১৬,৪০০ হয়েছে, প্রতি ১০ গ্রামে যা ₹৭১,৬০০।
আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব:
বিশ্ববাজারে Comex-এ সোনার দাম (Gold Price) বর্তমানে $৩,২২০ প্রতি আউন্স এর আশেপাশে রয়েছে, যা কিছুদিন আগের রেকর্ড $৩,২৪৫ থেকে কিছুটা কম। এই দাম কমার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনা পণ্যের উপর শুল্ক ১৪৫% পর্যন্ত বাড়িয়েছেন এবং পাল্টা জবাবে চীনও আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক ১২৫% করেছে।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং তারা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার (Gold Price) দিকে ঝুঁকছেন। তবে সর্বোচ্চ দামের পর কিছুটা প্রফিট বুকিং-এর কারণেই দাম কিছুটা নেমে এসেছে।
ভারতের বাজারে প্রভাব:
ভারতের বাজারে সোনার দাম (Gold Price) মূলত আন্তর্জাতিক দামের উপর নির্ভরশীল হলেও, স্থানীয় উৎসব, আমদানির খরচ, রুপি-ডলার বিনিময় হার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতির উপরও অনেকটাই নির্ভর করে। ১৪ এপ্রিল বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদা ছিল বেশি, তবে আন্তর্জাতিক দামের পতনের কারণে দাম পড়ে গেছে।
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল MCX (Multi Commodity Exchange) এ পুনরায় সোনার ও রূপার ট্রেডিং শুরু হবে। ১ এপ্রিলের সর্বশেষ ট্রেডিং সেশনে MCX-এ সোনার দাম ₹৯৩,৮৮৭ প্রতি ১০ গ্রাম ছিল, যা ₹৯৩,৯৪০-র নতুন উচ্চতাও ছুঁয়েছিল। এই বছর এখনো পর্যন্ত সোনার দাম ১৮-১৯% বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হতে পারে ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের ভাষণ, যা বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যদি সুদের হার কমানোর কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়, তাহলে সোনার দাম আবারও বাড়তে পারে।
সোমবারের পতনের পর মঙ্গলবার সোনার (Gold Price) বাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখা যেতে পারে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে চলমান অস্থিরতা, বিশেষ করে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সুদের হারের সম্ভাব্য পরিবর্তন, আগামী দিনে সোনার দামে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। ফলে, যাঁরা সোনা কিনতে আগ্রহী, তাঁদের উচিত বাজারের চলতি পরিস্থিতির উপর নজর রাখা।