দীপাবলি মানেই আলো, আনন্দ ও নতুন সূচনার উৎসব। এই উৎসবের অন্যতম ঐতিহ্য হলো ধনতেরাসে সোনা কেনা। যুগের পর যুগ ধরে সোনা কেনা মানে শুভ, সমৃদ্ধি এবং সৌভাগ্যের প্রতীক। তবে আজকের দিনে সোনা আর শুধু গয়নার সীমায় আটকে নেই, এটি এখন ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ ও লাভজনক বিনিয়োগের অন্যতম মাধ্যম।
গয়নায় বিনিয়োগের গোপন খরচ
গয়নার প্রতি আবেগ অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু এর মধ্যে লুকিয়ে আছে কিছু আর্থিক অসুবিধা—
গয়না কিনতে হয় ৮% থেকে ১৫% পর্যন্ত মেকিং চার্জ, যা পরে ফেরত পাওয়া যায় না।
বিশুদ্ধতার ঝুঁকি থেকে যায়।
বাড়িতে বা লকারে সংরক্ষণ নিয়ে বাড়তি খরচ ও ঝামেলা।
প্রয়োজনে দ্রুত বিক্রি করাও কঠিন, বিশেষ করে গয়নার সঙ্গে আবেগ জড়িত থাকলে।
তাই আর্থিক দিক থেকে গয়না সঞ্চয় নয়, বরং আবেগ প্রকাশের মাধ্যম।
স্মার্ট বিকল্প: গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড
যারা সোনাকে বিনিয়োগে যুক্ত করতে চান, তাদের জন্য সবচেয়ে আধুনিক ও নিরাপদ উপায় হলো গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড।
👉 কীভাবে কাজ করে?
গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড আসলে Gold Exchange Traded Funds (ETF)-এ বিনিয়োগ করে। এগুলি সরাসরি আন্তর্জাতিক সোনার দামের সঙ্গে যুক্ত। ফলে সোনার আসল মালিকানার সুবিধা পাওয়া যায়, কিন্তু বিশুদ্ধতা, সংরক্ষণ বা নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝামেলা থাকে না।
👉 সুবিধাগুলি হলো—
ছোট অঙ্ক দিয়েই শুরু করা যায়।
SIP (Systematic Investment Plan)-এর মাধ্যমে নিয়মিত বিনিয়োগ করে ধীরে ধীরে সম্পদ গড়ে তোলা যায়।
অনলাইনে সহজেই কেনা-বেচা করা যায়।
যেকোনো সময় প্রয়োজনে অর্থ তুলে নেওয়া যায়।
বিনিয়োগে ভারসাম্য জরুরি
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি সুষম বিনিয়োগ পোর্টফোলিওতে সোনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে মোট বিনিয়োগের ১০-১৫% সোনায় রাখা উচিত।
এটি—
বাজারের অনিশ্চয়তার সময় সুরক্ষা দেয়।
মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে রক্ষা করে।
তবে সোনা কখনোই শেয়ার বা অন্যান্য মিউচুয়াল ফান্ডের বিকল্প নয়, বরং তাদের পরিপূরক।
ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন
ধনতেরাসে সোনা কেনা ঐতিহ্যের অংশ হলেও এখন সময় এসেছে এই ঐতিহ্যকে আধুনিক আর্থিক বুদ্ধির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার। গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ মানে শুধু শুভ সূচনা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ গড়ার স্মার্ট পদক্ষেপ।