ITR ফাইলিং নিয়ে বিপাকে করদাতারা, CBDT-কে সময়সীমা বাড়ানোর দাবি GCCI-র

আয়কর রিটার্ন (ITR) এবং ট্যাক্স অডিট রিপোর্ট দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি তুলল গুজরাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (GCCI)। সম্প্রতি সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস…

Can You Switch Tax Regime While Filing ITR? Know the Rules for Old vs New Regime

আয়কর রিটার্ন (ITR) এবং ট্যাক্স অডিট রিপোর্ট দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি তুলল গুজরাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (GCCI)। সম্প্রতি সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডিরেক্ট ট্যাক্সেস (CBDT)-কে পাঠানো এক প্রতিনিধিত্বে GCCI জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য চলতি সময়সীমা অনুযায়ী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ, রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ইউটিলিটি ফর্মগুলি যথাসময়ে প্রকাশিত হয়নি এবং তার সঙ্গে রয়েছে আয়কর দপ্তরের ই-ফাইলিং পোর্টালের একাধিক প্রযুক্তিগত সমস্যা।

সাধারণত এপ্রিল মাস থেকেই বিভিন্ন রিটার্ন দাখিলের ইউটিলিটি ফর্ম প্রকাশ করে আয়কর বিভাগ। এতে ট্যাক্সপেয়ার, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও অন্যান্য পেশাজীবীদের হাতে কয়েক মাস সময় থাকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। কিন্তু এবছর পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন। GCCI-এর অভিযোগ, চলতি বছর প্রয়োজনীয় ইউটিলিটি ফর্ম গড়ে তিন মাস দেরিতে প্রকাশিত হয়েছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্তও বেশ কয়েকটি ফর্ম প্রকাশিত হয়নি। এর ফলে ট্যাক্সপেয়ারদের হাতে কার্যত মাত্র এক মাসেরও কম সময় রয়েছে রিটার্ন দাখিল করার জন্য।

   

GCCI জানিয়েছে, এবছর সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে অডিটবিহীন ট্যাক্সপেয়াররা। যাদের জন্য রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়েছে। অথচ ITR-1 থেকে ITR-4 ফর্মগুলি প্রকাশিত হয়েছে মাত্র ৩০ জুলাই। ITR-5 ফর্ম প্রকাশিত হয়েছে আরও দেরিতে, ৮ আগস্ট। অথচ এই ফর্মের আওতায় পড়েন প্রতিষ্ঠান, LLP, AOP, BOI, ট্রাস্ট ও এস্টেট সহ বহু ধরনের অ্যাসেসি। এভাবে অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় অংশের ট্যাক্সপেয়ারদের সঠিকভাবে রিটার্ন প্রস্তুত ও দাখিল করা কার্যত অসম্ভব বলে জানিয়েছে GCCI।

এছাড়াও ITR-6 ও ITR-7 ফর্ম এখনও প্রকাশিত হয়নি। একইভাবে ট্যাক্স অডিটের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্ম 3CA-3CD এবং 3CB-3CD প্রকাশিত হয়েছে ২৯ জুলাই। এর ফলে অডিট বাধ্যতামূলক ট্যাক্সপেয়ারদের ক্ষেত্রেও সময়ের অভাব প্রকট।

রিটার্ন ফাইলিং প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে আয়কর দপ্তরের ই-ফাইলিং পোর্টাল। GCCI-এর বক্তব্য, নিয়মিত প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে ট্যাক্সপেয়ার ও পেশাজীবীরা রিটার্ন জমা দিতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন। মাঝপথে সিস্টেম হ্যাং, ফর্ম সাবমিট না হওয়া, OTP সমস্যা, প্রি-ফিল্ড ডেটা লোড না হওয়া—এসব কারণে সময় অপচয় হচ্ছে এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করা যাচ্ছে না।

ভারতের মতো দেশে এখনও অনেক জায়গায় অনিয়মিত ইন্টারনেট সংযোগ একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে টিয়ার-টু ও টিয়ার-থ্রি শহর বা গ্রামীণ অঞ্চলে করদাতারা ঠিকমতো অনলাইনে রিটার্ন ফাইল করতে পারছেন না। তার উপর সফটওয়্যার বিক্রেতারা নিয়মিত ইউটিলিটি আপডেট করতে বাধ্য হচ্ছেন, যার ফলে ট্যাক্সপেয়ারদের সময় আরও কমে যাচ্ছে। এই বাস্তব সমস্যাগুলির দিকে নজর দিতে CBDT-এর কাছে আবেদন জানিয়েছে GCCI।

Advertisements

CBDT-কে GCCI-এর দাবি:
GCCI তাদের প্রতিনিধিত্বপত্রে স্পষ্ট জানিয়েছে যে, সরকারের তরফে অডিটবিহীন ট্যাক্সপেয়ারদের জন্য শেষ সময়সীমা ৩১ জুলাই থেকে বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর করা হলেও, ইউটিলিটি প্রকাশে বিলম্ব সেই বাড়তি সময়ের সম্পূর্ণ সুফল কেড়ে নিয়েছে। এভাবে ট্যাক্সপেয়ারদের উপর অযথা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।

ফলে GCCI-এর দাবি, CBDT যেন অন্তত এক মাস সময়সীমা বাড়ায়, যাতে রিটার্ন ও ট্যাক্স অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হয় ৩০ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে পরবর্তী তারিখে। তাদের মতে, এতে ট্যাক্সপেয়ার, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ট্যাক্স প্রফেশনাল এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা সঠিকভাবে ও নির্ভুলভাবে কাজ সম্পূর্ণ করতে পারবেন।

অনেক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের বক্তব্য, আয়কর দপ্তর যদি সময়সীমা বাড়ায় তবে শুধুমাত্র ট্যাক্সপেয়ারদেরই নয়, সরকারেরও লাভ হবে। কারণ যথাযথ সময় নিয়ে রিটার্ন ফাইল করলে ভুলভ্রান্তি কম হবে এবং অডিট সংক্রান্ত জটিলতাও হ্রাস পাবে। তাছাড়া যথাযথ কমপ্লায়েন্স হলে সরকারের কর রাজস্ব আদায়ও সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে।

সব মিলিয়ে, সময়সীমা নিয়ে করদাতাদের মধ্যে এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। যারা অডিটবিহীন করদাতা, তাদের হাতে মাত্র কয়েক সপ্তাহ সময় রয়েছে। আর যাদের ট্যাক্স অডিট বাধ্যতামূলক, তাদের জন্যও যথেষ্ট সময় নেই। এই পরিস্থিতিতে GCCI-এর দাবি যে বাস্তবসম্মত, তা স্পষ্ট। এখন দেখার বিষয় CBDT এই দাবির প্রতি কীভাবে সাড়া দেয়। যদি সময়সীমা বাড়ানো না হয়, তবে হাজার হাজার করদাতা ও পেশাজীবীর উপর চাপ আরও বহুগুণে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।