উৎসবের মরশুমে ভারতীয় সোনার বাজারে নতুন রেকর্ডের পূর্বাভাস

Today’s Kolkata Gold Price: Find Out 22K & 24K Gold Rates for November 9

উৎসবের মরশুম, সাংস্কৃতিক উপাদান এবং সাম্প্রতিক জিএসটি সংস্কারের প্রভাবে ভারতে সোনার গয়নার (Gold Jewellery) চাহিদা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছে মিরায় অ্যাসেট মিউচুয়াল ফান্ড। যদিও সোনার দাম ইতিমধ্যেই রেকর্ড উচ্চতায় অবস্থান করছে, তারপরও ভারতীয় বাজারে ঐতিহ্য ও বিবাহ-সম্পর্কিত কেনাকাটা এই চাহিদাকে স্থিতিশীল রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisements

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারত ও চীন একসঙ্গে বিশ্বের মোট সোনার গয়নার চাহিদার ৫০ শতাংশেরও বেশি জোগান দেয়। ভারতে উৎসব ও বিবাহের মৌসুম সবসময়ই সোনার বাজারকে চাঙ্গা করে তোলে। অন্যদিকে, চীনে ভোক্তা ব্যয় পুনরুদ্ধার এবং সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচি শহুরে বাজারে গয়নার চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।

   

তবে ফান্ড হাউসটি সতর্ক করে জানিয়েছে, সোনার দাম দীর্ঘ সময় ধরে অত্যধিক উচ্চতায় থাকলে তা চাহিদার গতি কমিয়ে দিতে পারে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার মূল্য প্রতি আউন্স ৩,৫০০ থেকে ৩,৬০০ মার্কিন ডলারের ওপরে ঘোরাফেরা করছে। মিরায় অ্যাসেট-এর বক্তব্য অনুযায়ী, দাম আরও বাড়তে পারে, তবে অতি মূল্য-সংবেদনশীলতার কারণে মাঝেমধ্যে সংশোধন বা পতন দেখা দেওয়াও অস্বাভাবিক নয়।

বৈশ্বিক বাজারে সোনার উত্থান:
বিশ্ববাজারে আগস্ট ২০২৫-এ সোনার দাম ৩.৯ শতাংশ বেড়ে ৩,৪২৯ মার্কিন ডলার প্রতি আউন্সে পৌঁছেছিল। চলতি বছর এখন পর্যন্ত সোনার দাম ৩১ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (WGC) তথ্য অনুযায়ী, এর পর দাম আরও বেড়ে ৩,৭০০ মার্কিন ডলারের ওপরে পৌঁছেছে। দুর্বল মার্কিন ডলার, স্বর্ণভিত্তিক ইটিএফ-এ (ETF) শক্তিশালী বিনিয়োগ এবং চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এই বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

ভারতীয় বাজারে সোনার দাম:
দেশীয় বাজারে, মাল্টি-কমোডিটি এক্সচেঞ্জে (MCX) সোনার দাম বর্তমানে প্রতি ১০ গ্রামে প্রায় ১,০৯,০০০ টাকা, যা ২০২৫ সালের শুরু থেকে বড় উত্থানকে নির্দেশ করছে। বিনিয়োগ প্রবাহ ও স্থিতিশীল দেশীয় চাহিদা সত্ত্বেও দামের ঊর্ধ্বগতি ভারতীয় বাজারকে বৈশ্বিক সোনার বাজারের তুলনায় এগিয়ে রেখেছে।

Advertisements

রুপোর শক্তিশালী সম্ভাবনা:
সোনার পাশাপাশি রুপোর দামও শক্তিশালী ধারা বজায় রেখেছে। ২০২৪ সালে প্রতি আউন্স ৩০ মার্কিন ডলার অতিক্রম করার পর থেকে রুপো শিল্প খাতে বিপুল ব্যবহার এবং বিনিয়োগের কারণে আকর্ষণ ধরে রেখেছে। মিরায়-এর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় ৬০ শতাংশ রুপোর ব্যবহার শিল্প খাতের জন্য, যার মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন, ৫জি অবকাঠামো, ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ডেটা সেন্টার উল্লেখযোগ্য। বিশেষত এআই সার্ভারগুলিতে রুপোর ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ:
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ব্যাটারি প্রযুক্তির নতুন ক্ষেত্র যেমন সিলভার-জিঙ্ক ও সিলভার-আয়ন ব্যাটারি এবং শক্তি সঞ্চয় ব্যবস্থার প্রসারে রুপোর দীর্ঘমেয়াদি চাহিদা আরও মজবুত হতে চলেছে।

সব মিলিয়ে, ভারতীয় সংস্কৃতির গভীরে প্রোথিত সোনার চাহিদা, উৎসব ও বিবাহ-আয়োজনের গুরুত্ব এবং রুপোর শিল্প-নির্ভর চাহিদা আগামী দিনে মূল্যবান ধাতুর বাজারকে আরও দৃঢ় করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে দাম অত্যধিক উচ্চতায় থাকায় ভোক্তাদের ব্যয়ক্ষমতা এই বৃদ্ধিকে সীমিত করতে পারে বলেও সতর্ক করছে মিরায় অ্যাসেট।