কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থা (EPFO) তাদের টাকা তোলার নিয়মে বড় পরিবর্তন এনেছে। সংস্থার সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ (CBT) ১৩ অক্টোবর বৈঠকে এই প্রস্তাবগুলি অনুমোদন করেছে। এর ফলে এখন বেসরকারি খাতের লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর জন্য ইপিএফ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা আরও সহজ হবে। সদস্যরা এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হলেও, বিশেষজ্ঞরা নতুন কিছু নিয়ম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এখন মাত্র তিনটি শর্তে টাকা তোলা যাবে:
আগে ইপিএফ থেকে টাকা তোলার জন্য মোট ১৩টি শর্ত ছিল। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন মাত্র তিনটি শর্ত প্রযোজ্য হবে — প্রয়োজনীয় চাহিদা, আবাসন সংক্রান্ত চাহিদা এবং বিশেষ পরিস্থিতি।
প্রয়োজনীয় চাহিদার মধ্যে চিকিৎসা, বিবাহ ও শিক্ষার খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। আবাসন চাহিদার ক্ষেত্রে বাড়ি তৈরি বা কেনার জন্য টাকা তোলা যাবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে সদস্যরা কোনও কারণ না দেখিয়েই টাকা তুলতে পারবেন।
শিক্ষার জন্য ১০ বার পর্যন্ত টাকা তোলা যাবে: EPFO Withdrawal Rules
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষার উদ্দেশ্যে ইপিএফ থেকে এখন ১০ বার পর্যন্ত টাকা তোলা যাবে। বিবাহের জন্য ৫ বার পর্যন্ত, চিকিৎসার জন্য ৩ বার পর্যন্ত এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে বছরে ২ বার পর্যন্ত টাকা তোলার অনুমতি থাকবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তন সদস্যদের স্বার্থে করা হয়েছে এবং এতে লাখো মানুষ উপকৃত হবেন।
১০০% উত্তোলন নিয়ম নিয়ে উদ্বেগ:
ইপিএফও-র বোর্ড আরও একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে — এখন সদস্যরা তাদের ফান্ডের ১০০% পর্যন্ত টাকা তুলতে পারবেন, তবে এর মধ্যে ২৫% অর্থ ইপিএফ অ্যাকাউন্টে রাখতে হবে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৭৫% পর্যন্ত টাকা তোলা যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নিয়মটি ভবিষ্যতে সমস্যার কারণ হতে পারে, কারণ এটি ইপিএফের মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী।
অবসরের পর জীবনের সুরক্ষাই ইপিএফের মূল লক্ষ্য:
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইপিএফ আসলে কর্মজীবনের পরবর্তী সময়ে আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তৈরি। চাকরি শেষ হওয়ার পর নিয়মিত আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেলে, এই তহবিলই জীবনের ভরসা হয়ে ওঠে। এখন যদি কর্মচারীরা বড় অঙ্কের টাকা তুলতে শুরু করেন, তাহলে অবসরের পর তাদের হাতে পর্যাপ্ত সঞ্চয় নাও থাকতে পারে।
শেষ কথা:
অতএব, ইপিএফও-র নতুন নিয়ম একদিকে যেমন সদস্যদের স্বস্তি দিচ্ছে, অন্যদিকে ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নও তুলছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, কর্মচারীদের উচিত প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সীমিত পরিমাণ টাকা তোলা, যাতে অবসরের পরও তাদের হাতে সুরক্ষার ভরসা থাকে।



