চাকরির বাজার ঊর্ধ্বমুখী, EPFO-তে ১৪.৫৮ লাখ নতুন সদস্য

Youth job market

নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, কর্মীদের কল্যাণ সম্পর্কে বাড়তি সচেতনতা এবং EPFO-র সফল প্রচার কার্যক্রমের ফলে ভারতের কর্মজীবী জনগণের মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। মার্চ ২০২৫-এ, এমত প্রেক্ষাপটে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (EPFO) ১৪.৫৮ লাখ নেট সদস্য সংযোজন করেছে বলে জানানো হয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রাথমিক পে-রোল তথ্য অনুযায়ী।

Advertisements

এই তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে EPFO-তে প্রায় ৭.৫৪ লাখ নতুন সাবস্ক্রাইবার যুক্ত হয়েছেন, যা ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর তুলনায় ২.০৩ শতাংশ এবং মার্চ ২০২৪-এর তুলনায় ০.৯৮ শতাংশ বেশি। বছরভিত্তিক তুলনায় নেট পে-রোল সংযোজনের বৃদ্ধি ১.১৫ শতাংশ।

বিশেষত, ১৮-২৫ বছর বয়সি তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই যোগদানের হার ছিল সর্বাধিক। মার্চ মাসে এই বয়সি গোষ্ঠী থেকে ৪.৪৫ লাখ নতুন সদস্য যোগ দিয়েছেন, যা মোট নতুন সদস্যের ৫৮.৯৪ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর তুলনায় এই গোষ্ঠী থেকে যোগদানের সংখ্যা ৪.২১ শতাংশ বেড়েছে এবং মার্চ ২০২৪-এর তুলনায় ৪.৭৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পুনরায় EPFO-তে ফেরা সদস্যদের হারেও বৃদ্ধি
EPFO জানিয়েছে, মার্চ ২০২৫-এ প্রায় ১৩.২৩ লাখ সদস্য, যারা পূর্বে EPFO থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, পুনরায় যুক্ত হয়েছেন। এই সংখ্যা ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর তুলনায় ০.৩৯ শতাংশ বেশি এবং মার্চ ২০২৪-এর তুলনায় ১২.১৭ শতাংশ বৃদ্ধি। এই সদস্যরা মূলত চাকরি পরিবর্তন করে আবার EPFO-এর আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন এবং নিজেদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ চূড়ান্তভাবে তুলে নেওয়ার পরিবর্তে তা স্থানান্তর করেছেন, যা তাঁদের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সুরক্ষায় সহায়ক।

নারী সদস্যদের অংশগ্রহণের ঊর্ধ্বগতি
মার্চ ২০২৫-এ EPFO-তে নতুনভাবে যুক্ত হওয়া নারী সদস্যের সংখ্যা ছিল প্রায় ২.০৮ লাখ, যা ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় ০.১৮ শতাংশ এবং গত বছরের তুলনায় ৪.১৮ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে, ওই মাসে মোট ২.৯২ লাখ মহিলা সদস্য নেট হিসেবে যুক্ত হয়েছেন, যা বছরভিত্তিক ০.৭৮ শতাংশ বৃদ্ধি। এটি কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ-সাম্য এবং বৈচিত্র্যময় জনবল গঠনের লক্ষ্যে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

Advertisements

রাজ্যভিত্তিক চিত্র: মহারাষ্ট্র শীর্ষে
পে-রোল তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, মার্চ মাসে নেট সদস্য সংযোজনের ৫৯.৬৭ শতাংশ এসেছে শীর্ষ পাঁচটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে। এই রাজ্যগুলি মোট ৮.৭০ লাখ সদস্য সংযোজন করেছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র শীর্ষে রয়েছে, রাজ্যটি একাই ২০.২৪ শতাংশ নেট পে-রোল সংযোজন করেছে।

মহারাষ্ট্র ছাড়াও তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, হরিয়ানা, গুজরাট, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা—এই আটটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আলাদা করে ৫ শতাংশের বেশি সদস্য সংযোজন করেছে মার্চ মাসে।

পে-রোল তথ্যের গুরুত্ব ও প্রসার
২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে ইপিএফও প্রতি মাসে পে-রোল ডেটা প্রকাশ করছে, যার আওতায় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সংগৃহীত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। পে-রোল ডেটা মূলত তিনটি প্রধান উপাদানে ভিত্তি করে তৈরি করা হয়—প্রথমবার ইপিএফও-তে যুক্ত হওয়া সদস্য (যাঁদের ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নাম্বার বা ইউএএন আধার দ্বারা যাচাইকৃত), ইপিএফও থেকে প্রস্থানকারী সদস্য এবং পূর্বে প্রস্থান করা সদস্যদের পুনরায় ইপিএফও-তে ফিরে আসা।

এই তথ্যগুলি দেশজুড়ে কর্মসংস্থান ও আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে। যদিও প্রকাশিত পে-রোল ডেটা প্রাথমিক ও প্রোভিশনাল প্রকৃতির, তথাপি এটি কর্মবাজারের গতিপ্রকৃতি এবং সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পগুলির কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন অর্থনীতি ও জননীতি বিশেষজ্ঞরা।