কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (CII) রবিবার গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার (GCC) বিষয়ে রাজ্যগুলির জন্য একটি মডেল স্টেট পলিসি প্রকাশ করেছে। এই নীতি একটি বিশদ কাঠামো, যার উদ্দেশ্য বহুজাতিক সংস্থাগুলির পরবর্তী প্রজন্মের কেন্দ্রগুলিকে ভারতে আকর্ষণ ও বিকাশের জন্য রাজ্যগুলিকে দিশা দেওয়া।
শিল্প সংস্থাটি জানায়, এই নতুন মডেল নীতি দেশের কোটি কোটি মানুষের জন্য উচ্চমানের কর্মসংস্থানের দরজা খুলে দিতে পারে। বর্তমানে ভারতের প্রায় ১,৮০০-র বেশি GCC-এর ৯৫ শতাংশই মাত্র ছয়টি বড় শহরে সীমাবদ্ধ। এবার লক্ষ্য হল টিয়ার-টু ও টিয়ার-থ্রি শহরগুলিতেও এই বৃদ্ধিকে ছড়িয়ে দেওয়া। এর জন্য অবকাঠামো, প্রণোদনা, নিয়মতান্ত্রিক স্বচ্ছতা ও দক্ষতা উন্নয়নের সমন্বিত ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সিআইআই-এর মহাপরিচালক চন্দ্রজিৎ ব্যানার্জি বলেন, “ভারতে GCC-র অসাধারণ উত্থান গত দুই দশকে আমাদের অর্থনৈতিক যাত্রার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তবে এই নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখতে এবং বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনে আমাদের অংশীদারি বাড়াতে রাজ্যগুলিকে সুস্পষ্ট, প্রতিযোগিতামূলক ও উদ্ভাবনমুখী নীতি গ্রহণ করতে হবে। আজ প্রকাশিত মডেল স্টেট GCC পলিসি সেই প্রচেষ্টার জন্য একটি প্রস্তুত কাঠামো দিচ্ছে। এটি রাজ্যগুলিকে নিজস্ব কৌশল তৈরিতে সাহায্য করবে, মেট্রো শহরের বাইরে GCC বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে এবং বৃহৎ পরিসরে মানসম্পন্ন চাকরি তৈরি করবে।”
নীতিপত্রে অবকাঠামো থেকে শুরু করে প্রণোদনা, নিয়ন্ত্রক কাঠামো এবং দক্ষতা উন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই কার্যকরী পদক্ষেপের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সবুজ অবকাঠামো, ডেটা সুরক্ষা ফ্রেমওয়ার্ক এবং সিটি-ব্র্যান্ডিংয়ের মতো বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে বিদেশি সংস্থাগুলি আকৃষ্ট হয়।
চন্দ্রজিৎ ব্যানার্জি আরও বলেন, “এখন রাজ্যগুলিই ভারতের প্রতিযোগিতার সামনের সারির চালক। দ্রুত ও সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এই মডেল নীতি রাজ্যগুলিকে একটি টুলকিট দিচ্ছে—যার মাধ্যমে তারা বৈশ্বিক সংস্থাগুলিকে আকর্ষণ করতে পারবে, স্থানীয় ইকোসিস্টেমকে লালন করতে পারবে এবং দেশজুড়ে GCC-র টেকসই ও সুষম বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারবে।”
সিআইআই জানিয়েছে, এই নীতির সুপারিশগুলি ভারতের সেরা অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া হয়েছে এবং বিশ্বের শীর্ষ GCC গন্তব্যগুলির সঙ্গে তুলনা করে সাজানো হয়েছে। এর মাধ্যমে রাজ্যগুলিতে ‘চ্যাম্পিয়ন সিটি’ তৈরি করা যাবে—যেখানে ব্যবসায়িক পরিবেশ হবে শক্তিশালী এবং পেশাজীবী ও তাঁদের পরিবারের জন্য জীবনমান হবে উন্নত।
নীতিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, GCC-র পরবর্তী বৃদ্ধির ধারা ভৌগোলিকভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। যে রাজ্যগুলি আগে এবং দৃঢ়ভাবে পদক্ষেপ নেবে, তারাই বেশি লাভবান হবে—মানসম্পন্ন চাকরি, উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেম এবং বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনের সঙ্গে গভীর সংযুক্তির মাধ্যমে।
ব্যানার্জি আরও জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে GCC খাত ভারতের অর্থনীতিতে সরাসরি প্রায় ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রাখতে সক্ষম। ইতিমধ্যেই কয়েকটি রাজ্য এই মডেল নীতিতে আগ্রহ দেখিয়েছে এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপটে তা গ্রহণের চেষ্টা করছে। সিআইআই শীঘ্রই আঞ্চলিক কর্মশালা ও আলোচনার আয়োজন করবে, যাতে রাজ্যগুলিতে নীতির বাস্তবায়ন সহজ হয়।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
