Saudi Aramco: অ্যাপলে অবনমন, আরবের আরামাকো বিশ্বের সেরা কোম্পানি

বিশ্বে এবছরে অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে। ফলে সবচেয়ে দামি কোম্পানির তালিকায় মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপেল শীর্ষস্থান হারিয়েছে। আর সেই শীর্ষস্থান দু’বছর পর…

বিশ্বে এবছরে অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে। ফলে সবচেয়ে দামি কোম্পানির তালিকায় মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপেল শীর্ষস্থান হারিয়েছে। আর সেই শীর্ষস্থান দু’বছর পর পুনরুদ্ধার করেছে সৌদি আরবের তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি আরামকো।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে আরামকো লাভ ছাড়িয়েছে আশি শতাংশেরও বেশি। কোম্পানির পক্ষ থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। আরামকোর বর্তমানের নিট আয় দাঁড়িয়েছে ৩৯.৫ বিলিয়ন ডলারে .যা গত বছরে একই সময়ে ২১.৭ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি। কোম্পানি এক বিবৃতিতে জানায় প্রাথমিকভাবে অপরিশোধিত তেলের দাম ও বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি এবং নিম্নমুখী মার্জিনগুলির উন্নতির কারণে এই লাভ হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা ও তেলের দাম বাড়ায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে সৌদির এই কোম্পানি আরামকো এই কোম্পানির প্রধান কার্যনির্বাহী কর্তা আমির নাসের বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ তেল এবং গ্যাস উৎপাদনে সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। সম্পদের দিক থেকে এরই মধ্যে বিশ্বে সবার উপরে উঠে এসেছে আরামকো। গায়ে লেগেছে সবচেয়ে দামি কোম্পানির তকমা।প্রযুক্তি কম্পানি অ্যাপেলকে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি এখন সৌদির আরামকো

২০২০ সালের পর এই প্রথম আরামকো প্রথম শীর্ষস্থানে পৌঁছালো। অ্যাপেলের শেয়ার মূল্য কমেছে। শেয়ার বাজারে এর মূল্য দাঁড়িয়েছে 2.37 ট্রিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে আরামকোর বাজার মূল্য ২.৪২ ট্রিলিয়ন ডলার।প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে এসব শেয়ার মূল্যে ঘটছে দরপতন। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানির অবস্থান হারিয়েছে অ্যাপেল।

যেদিকে বিনিয়োগকারীরা মনে করে ঝুঁকি কম তারা সাধারণত সেদিকেই যেতে চায়। এর আগেও ২০২১ সালে গুগলকে টপকে বিশ্বের তৃতীয় দামি কোম্পানি হয়ে গিয়েছিল সৌদি আরবের এই কোম্পানি। সে বছর অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৮২ ডলারের বেশি হয়ে যাওয়ায় আরামকো সেই মাইলফলকে পৌঁছাতে পেরেছিল। অপরিশোধিত তেলের দাম সেই সময় সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। ফলে গুগলের মেইন কোম্পানি আলফাবেটকে পেছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কোম্পানির জায়গা দখল করে নিয়েছিল আরামকো।সেই বছর প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে ছিল মাইক্রোসফট এবং অ্যাপেল

আরামকোর যাত্রা শুরু ১৯৩৩ সালে তখন নাম ছিল অ্যারাবিয়ান আমেরিকান কোম্পানি। তখন তার সঙ্গে যুক্ত ছিল স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, যা বর্তমানে শেভরন নামে পরিচিত ৷ ৭০ ও ৮০ দশকে ধীরে ধীরে আরামকোর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে চায় সৌদি সরকার। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান নামকরণ করা হয়।

সৌদি আরামকো বিশ্বের সর্ববৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি। প্রতিদিন ১ কোটি ২৫ লাখ ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াজাত করে প্রতিষ্ঠানটি সেখান থেকে আয় হয় ১০০ কোটি ডলার আয় করে। সৌদি আরামকোকে সে দেশের জ্বালানি নির্ভর অর্থনীতির প্রতীক বলে মনে করা হয়।

সৌদি সরকার ২০১৯ সালে ৫ই ডিসেম্বর প্রথম বার এই কোম্পানির শেয়ার ছাড়ে। আরামকো রিয়াধের স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার বিক্রি করে ২ হাজার ৫৬০ কোটি ডলার মূলধন সংগ্রহ করে। যার মাধ্যমে তারা চিনা ই-কমার্স কোম্পানি আলিবাবাকে পেছনে ফেলে রেকর্ড করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে আইপিও বিক্রির মাধ্যমে দুই লাখ কোটি কোম্পানিতে পরিণত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সলমন। সেখানে মূলধন দাঁড়ায় ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলারে। তারপরেও বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে সৌদির আরামকো।