PM কিষাণ ২১তম কিস্তি: কৃষকরা কবে পাবেন পরবর্তী ২,০০০ টাকা? জানুন সবিস্তারে

PM Kisan Samman Nidhi Scheme

ভারতের কোটি কোটি ক্ষুদ্র ও সীমান্ত কৃষকের কাছে সবচেয়ে বড় আর্থিক সহায়ক প্রকল্প হল প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা (PM-Kisan Samman Nidhi)। ২০১৯ সালে ঘোষিত এই প্রকল্প এখন দেশের সবচেয়ে বড় ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার স্কিম, যা ইতিমধ্যেই গ্রামীণ অর্থনীতিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে। কৃষকদের আয় সুরক্ষিত করতে ও চাষাবাদে নিয়মিত সহায়তা দিতে এই প্রকল্পে বছরে মোট ৬,০০০ টাকা তিন কিস্তিতে কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পৌঁছে যায়।

Advertisements

এখন পর্যন্ত মোট ২০টি কিস্তি কৃষকদের হাতে পৌঁছেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগস্ট মাসে ২০তম কিস্তি রিলিজ করেছেন, যা প্রায় ৯.৮ কোটি কৃষকের কাছে পৌঁছেছে, এর মধ্যে ২.৪ কোটি মহিলা কৃষকও রয়েছেন। তবে এবার সবার নজর এখন ২১তম কিস্তির দিকে, যা কৃষকদের কাছে দুর্গাপূজার আগে পৌঁছাবে বলে আশা ছিল।

২১তম কিস্তি কবে পাবেন কৃষকরা?

সরকার এখনও আনুষ্ঠানিক তারিখ ঘোষণা করেনি, তবে সূত্র অনুযায়ী নভেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে কিস্তি আসতে পারে। ইতিমধ্যেই বিশেষ ক্ষেত্রে কিছু অঞ্চলে টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে। যেমন—জম্মু ও কাশ্মীরের বন্যা ও ভূমিধ্বসে ক্ষতিগ্রস্ত ৮.৫৫ লাখ কৃষকের ব্যাঙ্কে ১৭১ কোটি টাকা সরাসরি স্থানান্তরিত হয়েছে। কৃষি মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান অক্টোবর ৭ তারিখে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বিতরণ করেন।

এর অর্থ হল, বাকি দেশের কৃষকদের কাছেও শীঘ্রই টাকা পৌঁছাবে। যাঁরা e-KYC সম্পন্ন করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে নভেম্বরেই ২১তম কিস্তি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্পের সুবিধা ও শর্ত

PM কিষাণ প্রকল্পের আওতায় যোগ্য কৃষক প্রতি চার মাস অন্তর ২,০০০ টাকা পান। বছরে মোট ৬,০০০ টাকা তিন কিস্তিতে দেওয়া হয়।

✔️ প্রথম কিস্তি: এপ্রিল-জুলাই

✔️ দ্বিতীয় কিস্তি: আগস্ট-নভেম্বর

✔️ তৃতীয় কিস্তি: ডিসেম্বর-মার্চ

এই প্রকল্পে উপকারভোগী হতে হলে কিছু শর্ত মানতে হয়। যেমন—

Advertisements
  • আবেদনকারী অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।

  • কৃষিজমির মালিক হতে হবে।

  • ক্ষুদ্র বা সীমান্ত কৃষক হলেই আবেদন করা যাবে।

  • মাসে ১০,০০০ টাকার বেশি পেনশনগ্রহীতা হলে বা আয়কর ফাইল করলে সুবিধা মেলবে না।

  • সংস্থাগত জমির মালিকরা এই সুবিধা পাবেন না।

e-KYC কেন জরুরি?

২১তম কিস্তি পেতে গেলে e-KYC বাধ্যতামূলক। এটি OTP ভিত্তিক বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে করা যায়। কৃষকরা চাইলে নিজেরাই pmkisan.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে OTP ভিত্তিক KYC করতে পারেন, অথবা নিকটবর্তী CSC সেন্টারে বায়োমেট্রিক KYC করাতে পারেন।

নিজের কিস্তির অবস্থা কীভাবে দেখবেন?

যাঁরা জানেন না তাঁদের কিস্তি পৌঁছেছে কিনা, তাঁরা সহজেই অনলাইনে যাচাই করতে পারেন—

1️⃣ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান: pmkisan.gov.in

2️⃣ “Know Your Status” অপশনে ক্লিক করুন

3️⃣ রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ক্যাপচা পূরণ করে “Get Data” চাপুন

এরপর স্ক্রিনে আপনার কিস্তির তথ্য দেখাবে।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রভাব

অর্থনীতিবিদদের মতে, PM কিষাণ প্রকল্প গ্রামীণ বাজারে নগদ প্রবাহ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বীজ, সার, কীটনাশক কেনা বা জমির কাজের শ্রমিক ভাড়া—সব ক্ষেত্রেই এই টাকা কৃষকের কাজে আসছে। এছাড়াও, মহিলাদের হাতে সরাসরি টাকা পৌঁছানো তাঁদের আর্থিক স্বাধীনতাকেও শক্তিশালী করছে।

২১তম কিস্তি নভেম্বর মাসেই রিলিজ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই যাঁরা এখনও e-KYC করেননি, তাঁদের এখনই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা উচিত। PM কিষাণ শুধু অর্থনৈতিক সাহায্য নয়, এটি ভারতের কৃষক সমাজকে আত্মনির্ভর করে তুলতে সরকারের অন্যতম বৃহৎ পদক্ষেপ।