৮ম পে কমিশনের (8th Pay Commission) কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে গত মাসে Terms of Reference (ToR) নোটিফিকেশন জারির পর। এর পরেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল (স্টাফ সাইড), জয়েন্ট কনসালটেটিভ মেশিনারি (NC JCM) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠিয়েছে। সংস্থাটি ToR–এ বড় ধরনের সংশোধন ও সংযোজনের দাবি তুলেছে, যা বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের আর্থিক সুরক্ষা ও ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ToR–এ ‘Expectations of Stakeholders’ ধারা পুনঃস্থাপনের দাবি:
NC JCM–এর সেক্রেটারি শিবা গোপাল মিশ্র ইকনমিক টাইমস–এ উদ্ধৃত হয়ে জানান, ৮ম পে কমিশনের ToR–এ ৭ম কমিশনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ধারা — “Expectations of Stakeholders” — বাদ পড়েছে। এই ধারা কর্মচারীদের মতামত ও প্রত্যাশাকে কমিশনের কার্যপরিধিতে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দিত। মিশ্রের দাবি, এটি বাদ যাওয়া কর্মচারীদের কাছে “নিরুৎসাহজনক বার্তা” পাঠাচ্ছে, তাই এই ধারা অবিলম্বে পুনঃস্থাপন করা উচিত।
‘Unfunded Cost’ বাক্যাংশ বাদ ও ২০% অন্তর্বর্তীকালীন রিলিফের প্রস্তাব:
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ToR–এ থাকা “unfunded cost of non-contributory pension schemes” বাক্যাংশটি বিভ্রান্তি তৈরি করছে এবং এটি মুছে ফেলা দরকার। পাশাপাশি NC JCM কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য ২০% অন্তর্বর্তীকালীন আর্থিক সহায়তা (Interim Relief) প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে, যতদিন না কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ কার্যকর হচ্ছে। সংস্থার মতে, ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির চাপে এই সাহায্য জরুরি।
ওল্ড পেনশন স্কিম (OPS) পুনরুদ্ধারের দাবি:
সংস্থাটি দীর্ঘদিনের দাবিকে নতুন করে তুলে ধরে বলেছে, ওল্ড পেনশন স্কিম (OPS) পুনরায় চালু করা উচিত, বিশেষ করে যাঁরা ১ জানুয়ারি ২০২৪–এর পর থেকে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। NPS–এর তুলনায় OPS কর্মচারীদের অবসর–পরবর্তী আর্থিক নিরাপত্তা অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
পেনশন বৃদ্ধির প্রস্তাব ও কমিশনের সময়সীমা:
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ১১ বছর পর কমিউটেশন পুনরুদ্ধার এবং অবসর–পরবর্তী প্রতি পাঁচ বছরে ৫% অতিরিক্ত পেনশন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও, ১ জানুয়ারি ২০২৬–কে ৮ম পে কমিশনের বাস্তবায়ন তারিখ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছে।
বর্তমানে বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) রঞ্জনা দেশাই–এর নেতৃত্বে গঠিত ৮ম পে কমিশন আগামী ১৮ মাসের মধ্যে তার সুপারিশ জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে এই কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হতে পারে ২০২৭ সালের মাঝামাঝি, এবং তা কার্যকর হবে ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে, সরকার অনুমোদন দিলে তা রেট্রোস্পেকটিভভাবে প্রয়োগ করা হবে।
