অষ্টম বেতন কমিশনে ১৯,০০০ পর্যন্ত বাড়বে সরকারি কর্মীদের বেতন! জানুন বিস্তারিত

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর! অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) কার্যকর হলে তাদের মাসিক বেতন ১৪,০০০ থেকে ১৯,০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। গোল্ডম্যান স্যাকস…

8th-pay-commission-salary-increase-government-employees-up-to-19000

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর! অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) কার্যকর হলে তাদের মাসিক বেতন ১৪,০০০ থেকে ১৯,০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। গোল্ডম্যান স্যাকস নামক আর্থিক পরিষেবা সংস্থা মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এই অনুমান প্রকাশ করেছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) বেতন সংশোধন প্রায় ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং ৬৫ লক্ষ পেনশনভোগীদের উপকৃত করবে। এই কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া ২০২৫ সালের এপ্রিলে শুরু হতে পারে, এবং এর সুপারিশগুলি ২০২৬ বা ২০২৭ সালের মধ্যে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

   

গোল্ডম্যান স্যাকস বিভিন্ন বাজেট বরাদ্দের ভিত্তিতে বেতন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করেছে। বর্তমানে একজন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীর গড় মাসিক বেতন করের আগে ১ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন বাজেট পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে সংস্থাটি সম্ভাব্য বেতন বৃদ্ধির হিসেব দিয়েছে:

Advertisements

-যদি সরকার অষ্টম বেতন কমিশনের জন্য ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করে, এবং এর অর্ধেক বেতন সংশোধনে এবং বাকি অর্ধেক পেনশনে ব্যবহৃত হয়, তবে গড় বেতন মাসে ১,১৪,৬০০ টাকায় উন্নীত হতে পারে।

-২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ হলে বেতন বেড়ে ১,১৬,৭০০ টাকা হতে পারে।

-যদি বরাদ্দ ২.২৫ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছায়, তবে গড় বেতন মাসে ১,১৮,৮০০ টাকা হতে পারে।

-এই হিসেব অনুযায়ী, বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ ১৪,০০০ থেকে ১৯,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।

২০১৬ সালে কার্যকর হওয়া সপ্তম বেতন কমিশন সরকারের জন্য ১.০২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করেছিল। সেই সময় সংশোধিত বেতন এবং পেনশন ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে পূর্ববর্তীভাবে প্রয়োগ করা হলেও, আনুষ্ঠানিকভাবে এটি ২০১৬ সালের জুলাই থেকে চালু হয়েছিল। এর ফলে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছিল। অষ্টম বেতন কমিশনের ক্ষেত্রেও অনুরূপ আর্থিক প্রভাব প্রত্যাশিত, যা ২০২৭ থেকে অনুভূত হবে।

অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) গঠিত হলে এটি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর এবং বেতন ও পেনশন সংশোধনের অন্যান্য দিক নির্ধারণ করবে। কর্মচারী ইউনিয়নগুলি ইতিমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা সপ্তম বেতন কমিশনের মতো ২.৫৭ বা তার চেয়ে বেশি ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর দাবি করতে পারে। এই ফ্যাক্টরটি বেতন বৃদ্ধির পরিমাণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) সুপারিশ কার্যকর হলে সরকারের ব্যয় বাড়বে, যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গোল্ডম্যান স্যাকসের রিপোর্ট অনুযায়ী, বেতন বৃদ্ধি কর্মচারীদের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াবে, যা ভোগ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে। খুচরা বিক্রি এবং ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে। তবে, এই বর্ধিত ব্যয় সরকারের বাজেটে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন।

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীরা অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য বেতন বৃদ্ধি, উন্নত ভাতা এবং পেনশন সুবিধার আশা করছেন। মূল্যস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এই সংশোধন তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে প্রতিরক্ষা কর্মীদের জন্য এটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ তাদের কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী উপযুক্ত সুবিধা প্রয়োজন।

গোল্ডম্যান স্যাকসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) এপ্রিল ২০২৫-এ গঠিত হতে পারে। এরপর কমিশন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, কর্মচারী ইউনিয়ন এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশ তৈরি করবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক থেকে দুই বছর সময় লাগতে পারে, এবং সুপারিশগুলি ২০২৬ বা ২০২৭ সালে কার্যকর হতে পারে।

স্বাধীনতার পর থেকে সাতটি বেতন কমিশন গঠিত হয়েছে, যার মধ্যে সপ্তমটি ২০১৬ সালে কার্যকর হয়েছিল। প্রতিটি কমিশন সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে এবং বেতন কাঠামো আধুনিক করেছে। অষ্টম বেতন কমিশনও এই ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) আর্থিক প্রভাব মোকাবিলা করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। সপ্তম বেতন কমিশনের তুলনায় বরাদ্দ প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে, যা বাজেটের ভারসাম্য রক্ষায় পরিকল্পনা দাবি করে। তবে, এটি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার পাশাপাশি অর্থনীতিতে গতি আনবে।

গোল্ডম্যান স্যাকসের রিপোর্ট অনুযায়ী, অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের জন্য নতুন আশার আলো নিয়ে আসবে। মাসে ১৪,০০০ থেকে ১৯,০০০ টাকা বেতন বৃদ্ধি তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়াবে এবং অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই কমিশনের গঠন ও সুপারিশের দিকে সবার নজর থাকবে।