অষ্টম বেতন কমিশনের পর বেতনের প্রকৃত ও প্রত্যাশিত প্রক্ষেপণ

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মধ্যে অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এই কমিশনের গঠনের ঘোষণার পর থেকে,…

Will 8th Pay Commission Meet Salary Hike Expectations by 2026

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মধ্যে অষ্টম বেতন কমিশনের (8th Pay Commission) ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এই কমিশনের গঠনের ঘোষণার পর থেকে, প্রায় ৫০ লক্ষেরও বেশি কর্মচারী এবং ৬৫ লক্ষ পেনশনভোগী তাদের বেতন ও পেনশন বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় মশগুল। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, অষ্টম বেতন কমিশন ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে পারে। তবে, এই কমিশনের সুপারিশ এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায়, বেতন বৃদ্ধির প্রকৃত পরিমাণ এবং প্রত্যাশিত পরিমাণ নিয়ে জল্পনা চলছে।

Read Hindi: 8वें वेतन आयोग के बाद वेतन: वास्तविक बनाम अपेक्षित प्रक्षेपण

   

বেতন বৃদ্ধির প্রত্যাশা
অষ্টম বেতন কমিশনের ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ১.৯২ থেকে ২.৮৬-এর মধ্যে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সপ্তম বেতন কমিশনের সময় ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ছিল ২.৫৭, যার ফলে ন্যূনতম মৌলিক বেতন ৭,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮,০০০ টাকা হয়েছিল। এবারও একই ধরনের বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছেন কর্মচারীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫০ হলে ন্যূনতম মৌলিক বেতন ১৮,০০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫,০০০ টাকা হতে পারে। আর যদি ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৮৬ হয়, তাহলে এটি ৫১,৪৮০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। এই বৃদ্ধি শুধু মৌলিক বেতনেই নয়, মহার্ঘ ভাতা (DA), গৃহভাড়া ভাতা (HRA), এবং ভ্রমণ ভাতা (TA)-তেও প্রভাব ফেলবে।

কর্মচারী সংগঠনগুলো ২.৮৬ বা তার বেশি ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের দাবি জানিয়েছে, কারণ মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বর্তমান বেতন কাঠামো অপ্রতুল হয়ে পড়েছে। তবে, কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন, সরকার ২.৫০-এর কাছাকাছি ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর নির্ধারণ করতে পারে, যা আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

প্রকৃত বেতন বৃদ্ধির সম্ভাবনা
যদিও প্রত্যাশা বেশি, তবে প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি কিছুটা কম হতে পারে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশে ন্যূনতম মৌলিক বেতন ৪০,০০০ থেকে ৪৫,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে পারে। এছাড়া, মহার্ঘ ভাতা শূন্যে নেমে আসতে পারে, কারণ নতুন বেতন কাঠামোতে এটি মৌলিক বেতনের সঙ্গে একীভূত হতে পারে। গৃহভাড়া ভাতা এবং অন্যান্য ভাতাগুলোর পরিমাণও কিছুটা কমানো হতে পারে, যা সামগ্রিক বেতন বৃদ্ধিকে ২৫-৩০% এর মধ্যে সীমাবদ্ধ করতে পারে।

Advertisements

উদাহরণস্বরূপ, লেভেল-১ পদে নিযুক্ত একজন কর্মচারীর বর্তমান মৌলিক বেতন ১৮,০০০ টাকা। ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫৭ হলে তাঁর বেতন বেড়ে হবে ৪৬,২৬০ টাকা। তবে, ভাতা সমন্বয়ের পর সামগ্রিক বেতন ৩৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে পারে। এই ব্যবধান প্রত্যাশিত এবং প্রকৃত বেতন বৃদ্ধির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য তৈরি করছে।

কমিশনের গঠন ও সময়সীমা
সরকার জানুয়ারি ২০২৫-এ অষ্টম বেতন কমিশনের গঠনের অনুমোদন দিয়েছে, তবে এখনো এর সদস্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত হতে এবং কার্যকর হতে আরও দুই বছর সময় লাগতে পারে। এর ফলে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে বেতন বৃদ্ধি কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে। কিছু সূত্রের মতে, ২০২৭ সালের শুরুর দিকে এটি কার্যকর হতে পারে।

অর্থনৈতিক প্রভাব
অষ্টম বেতন কমিশনের বেতন বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “এই কমিশন সরকারি কর্মচারীদের জীবনমান উন্নত করবে এবং ভোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করবে।” তবে, বেতন বৃদ্ধির ফলে সরকারের উপর আর্থিক চাপ বাড়বে, যা প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার বোঝা হতে পারে।

কর্মচারীদের প্রত্যাশা ও বাস্তবতা
কর্মচারী সংগঠনগুলো বেশি ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর এবং পেনশন বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছে। তবে, সরকারের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় কম হতে পারে। বিশেষ করে, নিম্ন পদমর্যাদার কর্মচারীদের জন্য বেতন বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।