কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ৮ম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন (8th Pay Commission) এখন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করতে চলেছে। তবে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিতে এই কমিশনের কয়েক মাস সময় লাগবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে এক বিশ্লেষণ, যেখানে দেখা গেছে—আগের বেতন কমিশনগুলিতে বাস্তব বেতনবৃদ্ধি বা মুদ্রাস্ফীতির হিসাব কষে প্রকৃত বেতন বৃদ্ধির হার কেমন ছিল।
৭ম বেতন কমিশনের নামজাদা ‘ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর’ বনাম বাস্তব বৃদ্ধি:
২০১৬ সালে কার্যকর হওয়া ৭ম বেতন কমিশন একটি একক ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫৭ প্রস্তাব করেছিল, যা শিরোনাম দখল করেছিল সেই সময়। কিন্তু তথ্য অনুযায়ী, বাস্তবে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল মাত্র ১৪.৩%, অর্থাৎ মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব বাদ দিয়ে প্রকৃত বেতন বৃদ্ধি খুবই সীমিত ছিল।
এর তুলনায়, ৬ষ্ঠ বেতন কমিশন বাস্তব বেতন বৃদ্ধির হার দিয়েছিল প্রায় ৫৪%, যা গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই দুই কমিশনের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট—৭ম কমিশনের ফর্মুলা যতই আকর্ষণীয় শোনাক না কেন, কর্মীদের হাতে আসল অর্থের বৃদ্ধি অনেক কম ছিল।
আগের বেতন কমিশনগুলির তুলনামূলক চিত্র:
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের বেতনবৃদ্ধির ইতিহাস এভাবে এগিয়েছে:
২য় বেতন কমিশন: ১৪.২%
৩য় বেতন কমিশন: ২০.৬%
৪র্থ বেতন কমিশন: ২৭.৬%
৫ম বেতন কমিশন: ৩১%
৬ষ্ঠ বেতন কমিশন: ৫৪%
৭ম বেতন কমিশন: ১৪.৩%
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথমবারের মতো ৭ম বেতন কমিশনের অধীনে “বাস্তব বেতন বৃদ্ধি” আগের কমিশনের তুলনায় কম হয়েছে। এর আগে প্রতি নতুন বেতন কমিশনের সঙ্গে সঙ্গে কর্মচারীদের প্রকৃত আয় সর্বদাই বেড়েছিল।
কর্মচারীদের প্রত্যাশা ও আগামীর দৃষ্টি:
৮ম বেতন কমিশনের গঠন কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। মূল্যবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার ব্যয় দ্রুত বাড়ায়, এবার কমিশনের কাছ থেকে অধিক হারে বেতন সংশোধনের প্রত্যাশা করছেন প্রায় ৫০ লক্ষ সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগী।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের রাজস্ব ঘাটতি ও আর্থিক ভারসাম্যের মধ্যেও এই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। তবুও, ৮ম বেতন কমিশনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের “বাস্তব বেতন” আবারও ঊর্ধ্বমুখী হবে, এমন প্রত্যাশায় রয়েছেন সকলে।


