৮ম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হলেও, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কার্যত কোনও দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ফলে ১.২ কোটিরও বেশি কেন্দ্রীয় কর্মচারী ও পেনশনভোগীর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
এই বছরের ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ৮ম বেতন কমিশন গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু নয় মাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়নি, চূড়ান্ত হয়নি কমিশনের Terms of Reference (ToR) বা কর্মপদ্ধতির কাঠামো।
ToR মূলত কমিশনের কাজের পরিধি ও দায়িত্ব নির্ধারণ করে দেয়—যেমন বেতন কাঠামো, ভাতা, পেনশন বিধি ও অবসরকালীন সুবিধা সংক্রান্ত নিয়মাবলি। এটি ছাড়া কমিশনের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুই করা সম্ভব নয়। ফলে কমিশন এখনও কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ।
আগের কমিশনের তুলনায় ধীরগতি:
উল্লেখযোগ্যভাবে, ৭ম বেতন কমিশন সেপ্টেম্বর ২০১৩-তে ঘোষণা হয়েছিল, এবং পাঁচ মাসের মধ্যেই ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে চেয়ারম্যান ও ToR চূড়ান্ত হয়। অথচ ৮ম কমিশনের ক্ষেত্রে প্রায় নয় মাস পেরিয়ে গেলেও কোনও আনুষ্ঠানিক গঠন হয়নি।
বেতন বৃদ্ধি পেতে সময় লাগতে পারে: 8th Pay Commission Delay
ধরা যাক, আগামী বছর শুরুর দিকেই যদি কমিশন কার্যকরী হয়, তবুও অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে বেতন কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে সময় লাগতে পারে। সাধারণত কোনও বেতন কমিশন গঠন থেকে রিপোর্ট জমা, পর্যালোচনা ও বাস্তবায়ন পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে ২-৩ বছর সময় লেগে যায়।
৭ম বেতন কমিশনের উদাহরণ নিলে দেখা যায়, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কমিশন গঠন হয়, ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে রিপোর্ট জমা পড়ে এবং ২০১৬ সালে তা কার্যকর হয়। সেই ধারা মেনে চললে, ৮ম বেতন কমিশনের সুপারিশ ২০২৬ সালের শেষ বা ২০২৭ সালের শুরুতে জমা পড়লেও বেতন বৃদ্ধির বাস্তবায়ন জুলাই ২০২৭-এর আগে হওয়ার সম্ভাবনা কম।
৮ম বেতন কমিশনের আওতা:
গঠিত হলে এই কমিশন প্রায় ৫০ লক্ষ কর্মরত কেন্দ্রীয় কর্মচারী ও ৬৫ লক্ষ পেনশনভোগীসহ ১.২ কোটিরও বেশি মানুষকে বেতন, ভাতা ও পেনশন কাঠামোতে পরিবর্তনের সুবিধা দেবে। এর মধ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরাও থাকবেন।
এছাড়া কমিশন মহার্ঘ ভাতা (DA) সংশোধনের সুপারিশও করবে, যা মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় সূচকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারিত হয়।
শেষ কথা:
যদিও কমিশন গঠনের সরকারি অনুমোদন কর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে, কিন্তু চেয়ারম্যান ও ToR ঘোষণার বিলম্বে পুরো প্রক্রিয়াই থমকে আছে। ফলে, কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির উদযাপন শুরু হওয়ার আগে আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতেই হবে বলে মনে করা হচ্ছে।