লখনউ, ১৮ অক্টোবর ২০২৫: উত্তরপ্রদেশে শিল্পোন্নয়নের পথে বড় মাইলস্টোন ধরা দিল। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫০-রও বেশি বহুজাতিক কোম্পানি (MNCs) রাজ্যে বিনিয়োগ করতে চলেছে। একসময়ের কৃষিনির্ভর রাজ্য এখন দ্রুত ভারতের অন্যতম শিল্প ও বিনিয়োগকেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।
নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা আর সাফল্যের মডেল
যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশ সরকার যে নীতি গ্রহণ করেছে—“Safety, Stability, Success”—তা বিনিয়োগকারীদের আস্থা জোগাচ্ছে।
নিরাপত্তা (Safety): আইন-শৃঙ্খলা জোরদার হয়েছে, যার ফলে শিল্পপতিরা আশ্বস্ত।
স্থিতিশীলতা (Stability): রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিরতা বিনিয়োগ টানছে।
সাফল্য (Success): অবকাঠামো ও শিল্পপতি-বান্ধব নীতিতে বাস্তব উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে।
কোন কোন খাতে বিনিয়োগ আসছে?
সূত্র অনুযায়ী, প্রস্তাবিত বিনিয়োগ মূলত আসছে—
ম্যানুফ্যাকচারিং (অটোমোবাইল, টেক্সটাইল, ইলেকট্রনিক্স)
আইটি ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম
ডিফেন্স করিডর
নবায়নযোগ্য শক্তি (Renewables)
ফার্মাসিউটিক্যালস ও বায়োটেকনোলজি
এভাবে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ আসায় রাজ্যে লক্ষাধিক নতুন কর্মসংস্থান তৈরির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশ প্রতিরক্ষা শিল্প করিডর
রাজ্যে ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা করিডরের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। লখনউ, কানপুর, ঝাঁসি, চিত্রকূট ও আলিগড়—এই পাঁচটি কেন্দ্রকে ঘিরে প্রতিরক্ষা শিল্পের বড় হাব তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন শুরু হওয়াও এর বড় প্রমাণ।
অবকাঠামোতে বিপুল উন্নতি
গত কয়েক বছরে উত্তরপ্রদেশে অবকাঠামো উন্নয়ন নজিরবিহীন।
এক্সপ্রেসওয়ে ও মাল্টি-লেন হাইওয়ে রাজ্যের শিল্পাঞ্চলকে যুক্ত করছে।
মেট্রো রেল প্রকল্প ও স্মার্ট সিটি উদ্যোগ রাজ্যের নগরায়ণকে ত্বরান্বিত করছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ ও লজিস্টিকস সুবিধা এখন অনেক উন্নত, যা বিদেশি বিনিয়োগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া
বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা উত্তরপ্রদেশ সরকারের নীতি ও প্রণোদনা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ‘সিঙ্গল উইন্ডো ক্লিয়ারেন্স’, ট্যাক্স ছাড় ও জমি বরাদ্দ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে।
একজন শিল্প বিশেষজ্ঞ বলেন—
“এক দশক আগে উত্তরপ্রদেশে এত বড় মাপের বিনিয়োগ কেউ কল্পনা করেনি। যোগী সরকারের নীতি ও আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি বিদেশি সংস্থাগুলির জন্য রাজ্যকে আকর্ষণীয় করেছে।”
কর্মসংস্থান ও স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব
১৫০-রও বেশি MNCs-এর বিনিয়োগে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে কয়েক লক্ষ নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। স্থানীয় শিল্প ও ছোট ব্যবসাও এই প্রক্রিয়ায় উপকৃত হবে। ফলে কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে শিল্পনির্ভর ও বহুমুখী অর্থনীতিতে রূপান্তর আরও দ্রুত হবে।
উত্তরপ্রদেশে ১৫০+ বহুজাতিক কোম্পানির বিনিয়োগ ঘোষণাকে রাজ্যের জন্য এক বড় অর্থনৈতিক জয় বলেই মনে করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা ও অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সরকার যে বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে, তার ফল হাতেনাতে মিলছে। আগামী কয়েক বছরে উত্তরপ্রদেশ ভারতের নতুন শিল্পশক্তি কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলেই আশা বিশেষজ্ঞদের।