প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Fish Exports) নেতৃত্বে ভারতের মাছ রফতানি গত এক দশকে রেকর্ড গড়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মৎস্য, পশুপালন ও দুগ্ধ উন্নয়ন মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিং (লালন সিং)। মাছ রফতানিকারকদের সঙ্গে এক সভায় তিনি বলেন, “২০১৪ সালে ভারতের মাছ রফতানি ছিল ৩০,০০০ কোটি টাকা, যা আজ ২০২৫ সালে বেড়ে প্রায় ৬০,৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।”
এই রফতানি আরও বাড়ানোর জন্য সরকার ষোড়শ কমিশন গঠনের পরিকল্পনা করছে এবং এ বিষয়ে রফতানিকারক ও রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে পরামর্শ করা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, উচ্চ রফতানিকারী রাজ্যগুলির মতামত গ্রহণ করা হয়েছে, এবং তাদের দেওয়া পরামর্শ অত্যন্ত ইতিবাচক।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিং জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে গত ১১ বছরে ভারতের মৎস্য খাতে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। ২০১৪ সালে মাছ ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানির পরিমাণ ছিল ৩০,০০০ কোটি টাকা, যা ২০২৫ সালে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ৬০,৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
এই বৃদ্ধির পিছনে রয়েছে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ, যার মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা (পিএমএমএসওয়াই), আধুনিক মৎস্য চাষ প্রযুক্তি প্রচলন, এবং রফতানি বাজার সম্প্রসারণের জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা। পশ্চিমবঙ্গ, আন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরল, এবং ওড়িশার মতো উপকূলীয় রাজ্যগুলি এই রফতানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে।
মাছ রফতানি আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার ষোড়শ কমিশন গঠনের পরিকল্পনা করছে। এই কমিশনের উদ্দেশ্য হবে মৎস্য খাতের অবকাঠামো উন্নয়ন, গুণমান নিয়ন্ত্রণ, এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় মাছের চাহিদা বাড়ানো।
মন্ত্রী জানান, “আমরা রফতানিকারকদের সঙ্গে সভা করেছি এবং উচ্চ রফতানিকারী রাজ্যগুলির মতামত নিয়েছি। তাদের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই পরামর্শগুলি নিয়ে আলোচনা করব এবং পরিকল্পনা চূড়ান্ত করব।” তিনি আরও বলেন, ভারতের লক্ষ্য হল আগামী পাঁচ বছরে মাছ রফতানি ১ লক্ষ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া।
মোদী সরকারের আমলে মৎস্য খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং নীতিগত সংস্কার এই সাফল্যের পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার আওতায় ২০,০৫০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা মৎস্য চাষের উৎপাদন বাড়ানো, অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং রফতানি বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।
এছাড়া, সরকার আধুনিক মৎস্য চাষ প্রযুক্তি, যেমন রিসার্কুলেটরি অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেম (আরএএস) এবং বায়োফ্লক প্রযুক্তি প্রচলন করেছে। এই উদ্যোগগুলি মৎস্য চাষীদের আয় বাড়িয়েছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় মাছের গুণমান উন্নত করেছে।
মাছ রফতানিতে পশ্চিমবঙ্গ, আন্ধ্রপ্রদেশ, এবং তামিলনাড়ু শীর্ষে রয়েছে। এই রাজ্যগুলি চিংড়ি, ক্যাটফিশ, এবং অন্যান্য সামুদ্রিক পণ্য রফতানিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। রাজীব রঞ্জন সিং জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আমরা নিয়মিত আলোচনা করছি। তাদের দেওয়া পরামর্শ আমাদের পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, রাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলে মৎস্য চাষের জন্য নতুন প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, যা রফতানি বাড়াতে সহায়ক হয়েছে।
ভারত বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ মাছ রফতানিকারক দেশ। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি ভারতীয় মাছের প্রধান ক্রেতা। বিশেষ করে চিংড়ি রফতানি ভারতের মৎস্য খাতের প্রধান শক্তি।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের মাছ রফতানি গত বছর ৮.৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। এই বৃদ্ধির পিছনে সরকারের গুণমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচারণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, ষোড়শ কমিশন মৎস্য খাতে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ, টেকসই মৎস্য চাষ প্রচার, এবং রফতানি প্রক্রিয়া সহজ করার উপর জোর দেবে। তিনি বলেন, “আমরা মৎস্য চাষীদের আরও প্রশিক্ষণ দেব এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াব।
আমাদের লক্ষ্য ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ মৎস্য রফতানিকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।” এছাড়া, সরকার স্থানীয় মৎস্য চাষীদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং ঋণ সুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
বছরের পর বছর ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার প্রধান শিক্ষক
প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারতের মাছ রফতানি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়া দেশের অর্থনীতি এবং মৎস্য খাতের জন্য একটি বড় সাফল্য। রাজীব রঞ্জন সিংয়ের ঘোষণা এই খাতে আরও উন্নতির সম্ভাবনা তুলে ধরেছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের সমন্বিত প্রচেষ্টায় ভারত আগামী দিনে মৎস্য রফতানিতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে পারে।