কালোমরিচ একটি গুরুত্বপূর্ণ মশলাজাতীয় ফসল, যা বিশ্বজুড়ে রান্নায় ব্যবহৃত হয়। (black pepper) শুধু রান্নার কাজে নয়, এর medicinal এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণও রয়েছে। কৃষকদের জন্য(black pepper) গোলমরিচ চাষ একটি লাভজনক উদ্যোগ হতে পারে, বিশেষত যখন এটি নারকেলের সঙ্গে আন্তঃফসল হিসাবে চাষ করা হয়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, নারকেল বাগানে গোলমরিচ চাষে উভয়ের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব, পাশাপাশি মাটির ক্ষয়ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আজকাল এই পদ্ধতি কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, কারণ এটি একটি টেকসই কৃষি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।(black pepper)
নারকেল বাগানে গোলমরিচ চাষের সুবিধা
নারকেল বাগানে গোলমরিচ চাষের মূল সুবিধা হলো এর মাধ্যমে কৃষকরা (black pepper) একাধিক ফসল একসঙ্গে উৎপাদন করতে পারেন, যা তাদের আয়ের উৎসকে বৈচিত্র্যময় এবং স্থিতিশীল করে তোলে। গোলমরিচ গাছ নারকেল গাছের নিচে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে এবং এটি মাটির ক্ষয়, আগাছা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশের জন্য উপকারী ভূমিকা পালন করে। এর ফলে কৃষকরা একদিকে যেমন বেশি আয় করতে পারেন, তেমনই পরিবেশগতভাবে পদ্ধতিটি লাভজনক(black pepper)
গোলমরিচের উন্নত জাতসমূহ
গোলমরিচের অনেক উন্নত জাত রয়েছে, যেগুলি নারকেল বাগানে চাষ করা যায়। (black pepper) এর মধ্যে পান্নিউর ১, পান্নিউর ৪, পান্নিউর ৫, থেভাম, শ্রীকারা, পঞ্চমী এবং করিমুন্ডা উল্লেখযোগ্য। বিশেষত, পান্নিউর ১ জাতটি নারকেল বাগানে চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত এবং এর ফলনও ভালো হয়। পান্নিউর ১ জাতটি থেকে প্রতি বছর ২.৫ থেকে ৪ কেজি শুকনো মরিচ পাওয়া যায়, যা চাষিদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক। অন্যদিকে, পান্নিউর ৪, পান্নিউর ৫, শ্রীকারা, এবং পঞ্চমী জাতগুলি প্রতি বছর ১.৫ থেকে ২.৫ কেজি শুকনো মরিচের ফলন দেয়।
গোলমরিচ চাষের জন্য পরিচর্যা পদ্ধতি
গোলমরিচ চাষে সফলতা পাওয়ার জন্য সঠিক পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গোলমরিচের লতা রোপণের ৬ মাস পর থেকে সার প্রয়োগ শুরু করতে হবে। সার প্রয়োগের সময় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে, সার মিশ্রণটি গাছের গোঁড়া থেকে ১৫ সেন্টিমিটার দূরে এবং বড় লতার ক্ষেত্রে প্রায় ১ ফুট দূরে প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের সময় পাতাগুলিকে এড়িয়ে চলা উচিত। এর জন্য একটি সঠিক পদ্ধতি হল, সার প্রয়োগের পর জায়গাটি ভালোভাবে ছিদ্র করে দেওয়া।
গোলমরিচ গাছের জন্য রাসায়নিক সার হিসেবে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম প্রয়োগ করা উচিত। প্রতি লতায় ৫০ গ্রাম নাইট্রোজেন, ৫০ গ্রাম ফসফরাস এবং ১৫০ গ্রাম পটাশিয়াম প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি জৈব সার যেমন ভার্মিকম্পোস্ট, গোবর সার বা কম্পোস্টও প্রতি লতায় ২ থেকে ৩ কেজি প্রয়োগ করলে ফলন আরও বাড়ানো সম্ভব।
সেচ ব্যবস্থাপনা
গোলমরিচ গাছের সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন সেচ দেওয়া প্রয়োজন, তবে ড্রিপ সেচ বা স্প্রিংকলার সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে সেচ দেওয়া বেশি কার্যকরী হয়। সেচের মাধ্যমে মাটি আর্দ্র রাখা খুবই জরুরি, কারণ গোলমরিচ গাছের উন্নত বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত জল সরবরাহ প্রয়োজন।
রোগ ও পোকামাকড়ের প্রতিরোধ
গোলমরিচ গাছ বিভিন্ন ধরনের রোগ ও পোকামাকড়ের সংক্রমণে ভুগতে পারে। এর মধ্যে ঢলে পড়া রোগ ( wilt disease) একটি অন্যতম সমস্যা। এই রোগ প্রতিরোধের জন্য নিম কেক বা ভার্মি কম্পোস্ট এবং ছত্রাকনাশক ও জৈব এজেন্ট (যেমন ট্রাইকোডার্মা ভিরিড) ব্যবহার করতে হবে। এগুলি রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, গাছের পাতায় বা গোঁড়ায় কোনো ধরনের ক্ষতি যাতে না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।