হই হট্টগোলের মধ্যেও বুধবার রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal Assembly) বক্তব্য রাখলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল বেরিয়ে যাওয়ার সময়েও স্লোগান দিতে দেখা যায় বিরোধী দলের বিধায়কদের। যা নিয়ে বেড়েছে রাজনৈতিক উত্তাপ। এদিন রাজ্যপালের ভাষণের চরম বিরোধিতা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বললেন, মমতার লেখা বক্তৃতা বলেছেন রাজ্যপাল।
সাংবাদিকদের রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, আমরা মাননীয় রাজ্যপালকে অপমান করতে চাই না। আমাদের রাজ্যপাল তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের দেখানো পথে না হেঁটে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে হেঁটেছেন। বিশেষ করে রাজ্যপালের বক্তব্যে উঠে এসেছে আইনশৃংখলার প্রসঙ্গ। যেভাবে রাজ্যের প্রকৃত অবস্থার উল্লেখ না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিখে দেওয়া বক্তৃতা রাজ্যপাল মহোদয় বলেছেন, সেটার আমরা বিরোধিতা জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, শোকপ্রস্তাবের পরেই যদি বলা হয় এখানে প্রতিদিন বোমা ফাটছে, প্রত্যেক দিন কোথাও কোথাও বোমা উদ্ধার হচ্ছে। বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা আক্রান্ত হচ্ছে। যে সংখ্যালঘু মুসলমানদের এনআরসির টুপি পড়িয়ে ভোট নিয়েছিলেন, তাঁদেরই বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির টুপি ধরে টানছেন। বিরোধীরা প্রচার করতে পারছে না। যোগ্য কর্মপ্রার্থীদের অবস্থান করতে হচ্ছে। সরকারি কর্মচারিদের যোগ্য ডিএর দাবিতে আদালতের পর ধর্না দিতে হচ্ছে। আবার আর্মিকে গিয়ে পুলিশ বলছে, ওদের আন্দোলনস্থল থেকে তুলে দেওয়া হোক। ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। অথচ রাজ্যপালকে দিয়ে বলানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সোনার বাংলায় বসবাস করছি।
পাশপাশি, যে রাজ্যপাল কেন্দ্র এবং রাজ্যের সরকারের সঙ্গে সংযোগ রাখেন, সেই রাজ্যপালকে দিয়ে মনরেগা, কেন্দ্রীয় আবাস যোজনা নিয়ে যে মিথ্যেচার করা হয়েছে, তা সমর্থন যোগ্য নয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, ফেক জবকার্ড রয়েছে। সেটা বাদ না দিলে বকেয়া টাকা দেওয়া হবে না। সেখানে রাজ্যপালকে দিয়ে বকেয়া টাকার কথা বলানো হয়েছে। কেন্দ্র সরকার অনেক অভিযোগের পরেও টাকা দিয়েছে। তবুও বলা হয়েছে টাকা দেওয়া হয়নি। কীভাবে এই কথা সাংবিধানিক প্রধানকে দিয়ে মিথ্যে কথা বলানো হয়? আমরা এতে ব্যথিত।
নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তিন তলা দুই তলা বাড়ির মালিককে আবাস যোজনার টাকা দিয়েছে। এর আগে আবাস যোজনার টাকা পেয়েছে, তাঁদেরকে দেওয়া হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানরা নিজেদের আত্মীয়দের টাকা দিয়েছেন। বহু জায়গায় এভাবেই বাড়ি দেওয়া হয়েছে।
শুভেন্দুর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের মুখ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কী ধর্মনিরপেক্ষতা মানে নওশাদ সিদ্দিকির চুল ধরে টানা? ধর্মনিরপেক্ষতার মানে হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে অপমান করা? শিলিগুড়িতে সরস্বতী মায়ের মুর্তিকে ভাঙচুর করা? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডিলিট দেওয়া নিয়ে রাজ্যপাল যাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন, তা নিয়ে প্রতিদিন সরব হব। সাফ জানালেন শুভেন্দু।