শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা (Pousmela ) শুরুর দিন৷ ১৮৪৩ সালের ২১ ডিসেম্বর (১২৫০ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কুড়ি জন অনুগামীকে নিয়ে রামচন্দ্ বিদ্যাবাগীশের থেকে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন। এটিই শান্তিনিকেতনের পৌষ উৎসবের মূল ভিত্তি। ১৮৯৪ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে আয়োজিত হয়ে আসছে পৌষমেলা।
মেলা শুরুর মুল উদ্দেশ্য ছিল গ্রাম্য সম্প্রদায় ও শিক্ষিত ব্ৰহ্ম সমাজের যোগাযোগের ভিত্তি গড়ে দেয়া। গ্রামের মানুষ তাদের পন্য প্রদর্শন করে বিক্রি করতে পারতো। মেলায় আয়োজকরা বিভিন্ন বিনোদনমুলক অনুষ্ঠান , যেমন আতসবাজী, যাত্রাপালা, বাউলগান প্রভৃতির আয়োজন করেন।
পৌষ মেলার প্রতিটি দিন বিভিন্ন কর্মসূচিতে পরিপূর্ন থাকত একসময়ে। বীরভূম জেলার বিভিন্ন আঙ্গিকের লোক সংস্কৃতির সংমিশ্রনের এই মেলা।এমনিভাবেই এটি গোত্রীয়, গ্রাম্য ও ভদ্র সাংস্কৃতির অন্যান্য উপাদানের এক মিলন স্থলে পরিনত হয় শান্তিনিকেতন । পৌষমেলা শুধুমাত্র বীরভূম জেলার নয়, অন্যান্য অঞ্চলের পর্যটকেদেরও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠত।
এখন সেখানে নেই পৌষমেলা। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের পক্ষ থেকে বীরভূম জেলা পরিষদের বোলপুর ডাকবাংলা মাঠে পৌষ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর থেকেই শুরু হয়েছে পৌষমেলা। চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বোলপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো ময়দানে এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।
আর শান্তিনিকেতন মেলার মাঠ খাঁ খাঁ করছে। ছোটবেলা থেকে এই দিনটাকে আমাদের শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা’র প্রথম দিন হিসেবে জানতাম কিন্তু এখন আর পৌষমেলা হয় না। বসন্ত-উৎসব’ও ঠিক মতো হয় না।
বোলপুর-শান্তিনিকেতনের আদি বাসিন্দা তথা বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী তাঁরা অনেকেই বলছেন এটা ভেবে খারাপ লাগে। তাঁরা বলছেন, ‘আমরা, যাদের বেড়ে ওঠা তথা পড়াশোনা সবকিছুই বোলপুর-শান্তিনিকেতনে, তাদের আবেগ বা খারাপ লাগাটা কোনো বহিরাগতর পক্ষে বোঝা সম্ভব না।’