বিশেষ প্রতিবেদন: দেশের অন্যতম প্রতিভাশালী বিজ্ঞানীর গবেষণায় তখন দেশ মুগ্ধ। সেই তাঁরই নামের পাশে লেগে গিয়েছিল ‘দেশদ্রোহী’ তকমা। তছনছ হয়ে গিয়েছিল কেরিয়ার। দেশের বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছিল ইসরোর তৎকালীন বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণের (Nambi Narayan) বিরুদ্ধে। জেলেও যেতে হয় তাঁকে। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছিল গুরুতর অভিযোগ।
কী ছিল সেই অভিযোগ? ১৯৯৪ সালে মলদ্বীপের দুই অভিযুক্ত গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে তিনি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন তথ্য পাচার করেছেন। চরবৃত্তির অভিযোগে ১৯৯৪ সালে বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণকে গ্রেফতার করে কেরল পুলিশ।
বলা হয় নাম্বি নারায়ণ ও ইসরোর অন্য এক বিজ্ঞানী ক্রায়োজেনিক রকেট টেকনোলজির নথি শত্রু দেশের হাতে তুলে দিয়েছেন। সে সময় নাম্বি দাবি করেছিলেন রকেটের তরল জ্বালানীর প্রযুক্তি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য চরকাণ্ড আসলে একটি আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। কিন্তু পুলিশ তাঁর কথা শোনেনি। এর জন্যই টানা ৪৮ দিন জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। মামলার দায়িত্ব সিবিআই নেওয়ার পর ১৯৯৬ সালে তিনি অভিযোগ থেকে মুক্ত হন। ১৯৯৮ সালে আদালত তাঁকে বেকসুর খালাস করে। কিন্ত চরবৃত্তির দাগ মেটেনি।
শুরু হয় তাঁর আইনি লড়াই। টানা ২৪ বছর পর ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নাম্বির বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় ক্ষতিপূরণ বাবদ নাম্বিকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট এও জানায়, নাম্বিকে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তা অনেক কম। তিনি নিম্ন আদালতে আবেদন করতে পারেন। সেইমতো নিম্ন আদালতে যান নাম্বি। মামলা চলার পাশপাশি কেরল সরকার নাম্বির সঙ্গে সমঝোতায় আসতে চায়। শেষপর্যন্ত সরকার তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসে ঠিক করে কেরল পুলিসের ওই নক্কারজনক কাজের জন্য বিজ্ঞানী নাম্বি নারায়ণকে ১.৩০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণের সেই চেক নাম্বির হাতে তুলে দেয় রাজ্য সরকার।
সেই ঘটনা নিয়ে তৈরি হচ্ছে সিনেমা। নাম রকেট্রি। মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন আর মাধবন। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন শাহরুখ খান।