দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন চলছিল বুধবার। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) মালবাজারবাসী (Malbazar) এমন বিসর্জন জীবনভর মনে রাখবেন। মাল নদীর হড়পা বান (Malbazar Flash Flood) এসে ভাসিয়ে নিয়েছে অনেককে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সঠিক নিখোঁজ সংখ্যা নিয়ে চলছে বিভ্রান্তি। সরকারিভাবে নিহতের সংখ্যা ৯ জন। এই বিসর্জন বিপর্যয়ের সময় প্রবল হুড়োহুড়ি ও পালানোর সময় কয়েকজনকে উদ্ধার করেন দুই যুবক মহম্মদ মানিক ও তরিফুল ইসলাম।
দুই যুবক মালবাজারের বাসিন্দা। তারা আর সবার সঙ্গে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে মাল নদীর তীরে এসেছিলেন। হড়পা বান আসার সময় হুড়োহুড়ির মাঝে দুজনই নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বেশ কয়েকজনকে টেনে তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মালবাজারে হাহাকার চলছে। এই পরিস্থিতির মাঝেও মহ: মানিক ও তরিফুলকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসছে অভিনন্দন বার্তা। দুজনই অবশ্য তেমন কিছু বলতে চাননি। তাদের বক্তব্য, চোখের সামনে এত বড় বিপর্যয় দেখে যতটা সম্ভব ততজনকে টেনে তুলেছিলাম।
জানা যাচ্ছে মালবাজারে বিসর্জন বিপর্যয়ের সময় আরও বেশ কয়েকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাল নদীর হড়পা বান থেকে কয়েকজনকে টেনে তোলেন। বিপর্যয়ের পর চলছে উদ্ধারকাজ। মাল নদীতে নেমেছে এনডিআরএফ।
হড়পা বান এই নদীতে আসে জানার পরেও কেন নদীর গর্ভে বিসর্জনের সময় বহু মানুষ নামলেন তা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। অভিযোগ, অতি উৎসাহের কারণে বিপদের মুখে পড়েন দর্শনার্থীদের বড় অংশ। হড়পা বানের মুহূর্তের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, অনেক বয়স্ক নদীতে নেমেছিলেন। তাঁরা অসহায়। কেন প্রশাসন তাঁদের আটকালো না উঠছে সেই প্রশ্ন।
আরও পড়ুন মাল নদীতে কেন বস্তা দিয়ে স্রোতের গতিমুখ পাল্টালো প্রশাসন ?
Malbazar Flash Flood: মাল নদীর স্রোত বস্তা দিয়ে ঘুরিয়েই বিপদ ডেকেছে প্রশাসন, বিস্ফোরক সেলিম
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের অভিযোগ, মাল নদীর স্রোত বালির বস্তার বাঁধ দিয়ে বিসর্জন ঘাটের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। যদি তেমন না করা হতো তাহলে বন্যার স্রোত নদীর অপর পাশ দিয়ে চলে যেত। বিতর্ক এড়াতে মুখে কুলুপ এঁটেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।
মালবাজারের বিসর্জন বিপর্যয়ের পর রাজ্য জুড়ে বিসর্জন কার্নিভালের জন্য শুক্রবার সব নদীর ঘাটে বিশেষ সতর্কতা রাখার নির্দেশ গেছে জেলাগুলিতে। নিয়ম না মানলে পুলিশ কড়া ভূমিকা নেবে এমনই জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।