তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলে শিক্ষাদফতরের নিয়োগ দুর্নীতির করুণ ছবি আরও জমাট হচ্ছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীদের বড় অংশের আশঙ্কা ঘুষ দিয়ে নিয়োগ পাওয়া সবার চাকরি বাতিল হলে বিপুল আর্থ সামাজিক সংকট তৈরি হবে। সেই দিকেই যাচ্ছে মামলার গতি। এদিকে যোগ্য প্রার্থীরা লাগাতার ধর্না চালিয়েও বুঝছেন, সরকারের দাবি বাস্তবে কার্যকরী হবেনা। চাকরি মিলবে না।
বিপুল বেআইনি লেনদেন করে কালো টাকার পাহাড়ে বলেছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি এখন জেলে। আর সুষ্ঠু নিয়োগ চেয়ে ৫৩১ দিন লাগাতার ধর্না মঞ্চে চাকরি প্রার্থীরা।
চাকরির নিশ্চয়তা চেয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ধর্মতলার গান্ধী মূর্তি পাদদেশে আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীরা। পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক হয়। শাসক শিবিরের ভূমিকায় কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছিলেন চাকরি প্রার্থীরা। কিন্তু হবু শিক্ষকদের দাবি এখনও পুরন হয়নি। অভিযোগ, সদর্থক ভূমিকা দেখা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের তরফে।
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানিয়েছেন, নবম-দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ করা হোক। তিনি রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর জরুরীকালীন হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রার্থনা করেছেন।
২০১৬ সালে প্রথম এসএলএসটি নবম-দ্বাদশের মেধাতালিকা ভুক্ত অথচ চাকরিতে নিয়োগপত্র না পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ কলকাতার বুকে শান্তিপূর্ণ ধর্ণা চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজ্য সরকারের ভুমিকা জনগণ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। অভিযোগ, যদি উন্নয়ন হয় বাংলা জুড়ে, তবে কেন যোগ্য চাকরি প্রার্থীগণ আজ রাস্তার ধারে? কেন তাদের ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না?
এই চাকরি প্রার্থীদের ধর্ণা মঞ্চের পাশেই গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ২৯ শে আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশের সভামঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। পাশেই নবম-দ্বাদশের বঞ্চিত হবু শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীদের ধর্ণা অব্যাহত। ধর্ণারত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ অতি দ্রুত চাকরিতে নিয়োগ চাইছেন।
চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ, নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির পাহাড় জমেছে। এমনকি অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এর আগে ২০১৯ সালে কলকাতার প্রেসক্লাবের সামনে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে এই বঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষিকা পদপ্রার্থীগণ ২৯ দিন ব্যাপী অনশন করেছিলেন। সেইসময় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ সম্পর্কে আশ্বস্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।