নিয়োগ তালিকায় নাম থেকেও বঞ্চিতদের আন্দোলন আজ ৫১৭ দিনে পড়ল৷ কখনও প্রেস ক্লাবের সামনে, কখনও সল্টলেকে আবার কখনও গান্ধী মূর্তির পাদদেশে আন্দোলন চলাকালীন তাদের কথায় কেউ কর্ণপাত করেনি৷ মুখ্যমন্ত্রীর তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ বলেছিলেন বিকাশ ভবন ঘুঘুর বাসা। কিন্তু যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ হয়নি৷ তাই এখনও বঞ্চনার দিন গুনতে হচ্ছে তাদেরকে৷ এখন ধীরে ধীরে প্রমাণিত হচ্ছে টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে। একের পর এক গ্রেফতারের পর আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন হবু শিক্ষকরা৷
Kolkata 24×7 এর বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কীভাবে মেধা তালিকার বাইরে দেওয়া হয়েছিল বিপুল চাকরি।
তাদের কথায়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা কমিটিতে থাকা সকলেই এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত৷ এই শান্তি প্রসাদ সিনহা ও অশোক সাহারাই নম্বর বিকৃত করেছে, তা সবাই জানে। কম নম্বর যারা পেয়েছে, টাকার বিনিময়ে তাদেরকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ যারা ভালো বুদ্ধিমানী ছাত্র, তারা জায়গা পায়নি। আসলে চাকরি দেওয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে৷ প্রথম ফেজে নাম আসা বহু ছাত্ররা এখনও ওয়েটিং লিস্টে৷ অথচ দ্বিতীয় ও তৃতীয় ফেজে যারা তাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে৷
নিয়ম অনুযায়ী, প্রথম ফেজে তাদের নাম থাকে, যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও লিখিত পরীক্ষায় নম্বর বেশী। তাঁদের ইন্টারভিউ, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের পরেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় তালিকায় থাকা চাকরি প্রার্থীদের সু্যোগ দেওয়া হয়৷ কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ফেজের ভেরিফিকেশন হয়েছে টাকার বিনিময়ে। টাকার খেলা তখন থেকেই শুরু হয়েছে৷
অভিযোগ, মন্ত্রীর তরফ থেকে নামের তালিকা সোজা চলে যেত এসপি সিনহাদের কাছে। উপদেষ্টা কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হত যে কোন প্রকারে এই নামগুলোকে ঢোকাতে হবে৷ তাই ইন্টারভিউয়ের নম্বর দেওয়া হত পেনসিলে। ফলত কারচুপি করা সুবিধে হত৷ যারা পিছনে রয়েছে, খুব সহজেই তাদেরকে এগিয়ে দেওয়া যেত। হবু শিক্ষকদের বক্তব্য, অশোক সাহা প্রাক্তন সচিব৷ তিনি সবটা জানেন৷
দুঁদে আইনজীবী ও সিপিআইএম সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য কী বলছেন, পড়ুন:
পড়ুন: এবার মমতাকে হেফাজতে নিয়ে প্রশ্ন করুক CBI: বিকাশ ভট্টাচার্য
তবে চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ, প্রাক্তন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার, তিনি এই দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত৷ গোটা দুর্নীতির মাথায় রয়েছেন তিনিই। তাঁকে দিয়েই দুর্নীতি করা হয়েছে। এখন তো মাত্র ২ জনকে গ্রেফতার করেছে৷ বাকি জনদেরও গ্রেফতার করা উচিত।
চাকরি প্রার্থীদের বক্তব্য, ওয়েটিং থেকে কতজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে? অভিযোগ, লকডাউনে এসএমএসের মাধ্যমেও চাকরি পেয়েছে কয়েক হাজার৷ তা সঠিক সংখ্যা মেলাতে গিয়ে এখন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কমিশনকেই। সেকারণেই সেই সংখ্যাটা প্রকাশ্যে আনতে চাইছে না সরকার৷ আর দুর্নীতি যে হয়েছে, সেটা আদালতের রায়ে প্রকাশ হয়ে গেছে। ইতিমধ্যেই একাধিক জনকে চাকরি বাতিল করেছে আদালত৷ চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক আইওয়াশ বলছেন অনেকেই৷
তবে স্বচ্ছ ও দ্রুত নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন জারি রাখার সিদ্ধান্ত চাকরি প্রার্থীদের৷ তারা জানিয়েছেন, সমস্ত প্রতিকুলতাকে উপেক্ষা করে আন্দোলন জারি রাখবেন হবু শিক্ষকরা৷