অনুভব খাসনবীশ: ১৬৯০ সাল নাগাদ কলকাতা (Kolkata) শহরের গোড়াপত্তন করেন জোব চার্নক। ১৬৯৮ সালে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৎকালীন জমিদার সাবর্ণ চৌধুরীর কাছ থেকে কিনে নিল হুগলি নদীর তীরের তিন তিনটি গ্রাম সুতানুটি, গোবিন্দপুর আর কলকাতা। এই শহর কলকাতারই প্রতিটি অঞ্চল, প্রতিটা রাস্তা, প্রতিটা গলির সঙ্গে মিশে রয়েছে ইতিহাস।
আরও পড়ুন Kolkata: বিভিন্ন অঞ্চলের নামকরণের ইতিহাসের প্রথম পর্ব
আরও পড়ুন Chamba Lama: কলকাতার রুপোর গয়নার ওয়ান স্টপ শপ
বৈঠকখানা রোড: ১৭৮৪ সালের লেফট্যানেন্ট কর্নেল মার্ক উডের মানচিত্রে লালবাজার থেকে পূর্বদিকে তৎকালীন মারাঠা খাত (পরে সার্কুলার রোড এবং বর্তমানে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড) পর্যন্ত এলাকার নাম ছিল “বয়টাকোন্না স্ট্রিট” (Boytaconnah Street)। নামটির উৎপত্তি “বৈঠকখানা” নামটি থেকে। সেকালে এই অঞ্চলের একটি প্রাচীন বটগাছের নিচে ব্যবসায়ীরা তাদের মালপত্র নিয়ে বিশ্রাম করতে বসতেন। ইতিহাস বলছে, জব চার্নক এখানে আসতেন। সেই থেকেই জায়গাটির নাম হয় বৈঠকখানা।
বউবাজার: বিনয়-বাদল-দীনেশ বাগ (বিবাদী বাগ) থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত এই রাস্তার নাম বউবাজার স্ট্রিট। ‘বউবাজার’ শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে দুটি মত রয়েছে। একটি মত অনুযায়ী, ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ মতিলাল তাঁর বাঙালি পুত্রবধূকে একটি বাজার লিখে দেন, সেই বাজারটিই ‘বহুবাজার’ (হিন্দিতে ‘বহু’ শব্দের অর্থ ‘পুত্রবধূ’) এবং পরে তা ‘বউবাজার’ নাম নেয়। যদিও আরও একটি মত বলছে, একসময় গোটা এলাকা জুড়ে প্রচুর দোকান এবং বেশ কয়েকটি বাজার ছিল। সেখান থেকেই জায়গাটির নাম ‘বহুবাজার’, পরে লোকের মুখে মুখে পরিবর্তিত হয়ে তা হয়ে যায় ‘বউবাজার’।
সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার: একসময় জায়গাটির নাম ছিল হুজুরিমল ট্যাঙ্ক। পাঞ্জাবি ব্যবসায়ী ৫৫ বিঘার অপর পুকুর খনন করেন । লোকে বলতেন হুজুরিমল ট্যাঙ্ক বা পাদ্মপুকুর। পরে কালের নিয়মে পুকুর ভরাট হয়ে যায়। ভরাট হওয়া জায়গায় থাকতে শুরু করেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কেরানিরা। জায়গাটি পরিচিতি পায় কেরানিবাগান নামে। পরে নাম হয় নেবুতলা বা লেবুতলা। সেখান থেকেই মাঠের নাম নেবুতলার মাঠ। তারও পরে শহীদ সন্তোষ মিত্রর নামে জায়গাটির নাম হয় সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার ।