ধর্মীয় উন্মত্ততায় রাজস্থানে (Udaipur) এক দর্জির গলা কেটে খুন ও প্রধানমন্ত্রীকে হুমকির ভিডিও তে দেশ জুড়ে চাঞ্চল্য। খুনের দায় নেওয়া দুই যুবক ধৃত। তাদের নাম মহম্মদ রিয়াজ আনসারি ও মহম্মদ। দুজনেই ভিডিওতে ধর্মীয় স্নোগান তুলে তারা দাবি করে আমরা বাঁচব আপনার জন্য, মরব আপনার জন্য। নিহত ব্যক্তির পুত্র নূপুর শর্মার একটি ছবি পোস্ট করেছিল বলে জানা যাচ্ছে।
উদয়পুরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। জারি ১৪৪ ধারা। রাজস্থান জুড়ে জারি সতর্কতা। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে যাতে কোনওরকম অশান্তি পরিবেশ তৈরি না হয় তার জন্য আবেদন করলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সোশ্যাল মিডিয়া মারফত মহম্মদ সেলিমের আবেদন, “রাজস্থানের উদয়পুরে ঘটা বর্বরোচিত খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে CPI(M)। প্রশাসনের কাছে, এই ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হচ্ছে। জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য।”
সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটি থেকেও হিন্দি ও ইংরাজিতে একই আবেদন করা হয়েছে। সিপিআইএম রাজস্থান রাজ্য কমিটি শান্তির আবেদন বার্তা দিয়েছে। এ রাজ্যে তাদের দুই বিধায়ক আছেন। দুজনেই শান্তি বার্তা দেন।
নিহত ব্যক্তির নাম কানহাইয়া লাল। তিনি একজন দর্জি। উদয়পুরে তাঁর দোকানে পোশাক তৈরির জন্য গিয়েছিল অভিযুক্ত দুই যুবক। তারা দোকানের মধ্যে কানহাইয়া লালকে কুপিয়ে খুন করেছে। আরও জানা যাচ্ছে, নিহত ব্যক্তির পুত্র সম্প্রতি ফেসবুকে বিতর্কিত হিন্দুত্ববাদী নেত্রী নূপুর শর্মার একটি ছবি পোস্ট করেছিল। সে কারণেই এই খুন বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ এমন সন্দেহ করছে এর কারণ, ধৃত দুই যুবক ধর্মীয় স্লোগান তুলে কানহাইয়া লালের খুনের দায় নেয়।
বিতর্কিত হিন্দুত্ববাদী নেত্রী নূপুর শর্মা সম্প্রতি হজরত মহম্মদকে নিয়ে টিভি চ্যানেলে মন্তব্য করেন। তাঁর মন্তব্যের পর দেশ জুড়ে হিংসাত্মক আন্দোলন ছড়ায়। পশ্চিমবঙ্গে এই বিক্ষোভ ছিল অগ্নিগর্ভ। অভিযোগ, রাজ্য সরকার প্রথম দিকে বিক্ষোভ থামানোর চেষ্টা করেনি। তবে পরে মুখ্যমন্ত্রী কড়া ভূমিকা নিতে বলেন পুলিশকে। বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। হাওড়া ও মুর্শিদাবাদে চলে অবরোধ, ভাঙচুর। নদিয়াতে হয় ভাঙচুর। অবরোধের জেরে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িক স্তব্ধ হয়েছিল।
তবে নূপুর শর্মা দাবি করেন, তিনি কাউকে কটাক্ষ করেননি। তাঁর আরও দাবি, ইসলাম ধর্ম বিশেষজ্ঞ যে কেউ তথ্য যাচাই করতে পারেন। কিন্তু বিতর্কের জেরে বিশ্ব জুড়ে প্রতিবাদ হয়। এতে আন্তর্জাতিক মহলে চাপে পড়ে মোদী সরকার। বিতর্কিত নেত্রীকে দল থেকে সরিয়েছে বিজেপি। আরও অভিযোগ, নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হলেও তিনি অধরা।