স্কুল শিক্ষক নিয়োগে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতিতে জর্জরিত তৃণমূল সরকার৷ বিরোধী পক্ষের হাজারো কটাক্ষে দিনরাত জেরবার হতে হচ্ছে শাসকদলের নেতাদের৷ এরই মধ্যে বাম আমলের (CPIM) চিরকুটের চাকরির কথা উল্লেখ করে চুপ করাতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জন্য একটি উদাহরণ পেশ করল তৃণমূল। কিন্তু দুর্নীতির প্রমাণ করতে গিয়ে তা ধোপে টিকল না। কারণ, তদন্তে নেমে এক তৃণমূল নেতা জানালেন চিরকুটের নাম ওই স্কুলে চাকরি হয়নি।
বাম আমলে চিরকুটে চাকরি হতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবির পর টিএমসির তরফে একটি চিরকুট প্রকাশ করা হয়। তাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের সিপিআইএমের দলীয় চিহ্ন সহ সাদা পাতায় নিয়োগের অনুরোধ করার প্রমাণ দাখিল করে তৃ়ণমূল। সেইরকম কোনও নিয়োগ হয়নি বলে এবার দাবি তৃ়ণমূল নেতার। এর জেরে শাসকদল বিব্রত।
পড়ুন: চিরকুটে কেন দুরকম কালি, CPIM-এর সিবিআই মার্কা প্রশ্নে হতচকিত তৃণমূল
এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর সিপিআইএম জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ দাবি করেছেন, মমতা সরকারের আমলে দুর্নীতির তুলনায় সিপিআইএমের চিরকুটের কোনও সামঞ্জস্য নেই।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ধেরুয়া অঞ্চল তৃণমূলের উপপ্রধান কাজল সিংহ। ভাইরাল চিরকুট হাতে পেতেই ছুটে যান স্থানীয় স্কুলে। সেখানে গিয়ে আসল সত্যিটা জানতে পারেন। তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল চিঠির খবর পেয়েই ওই স্কুলে গিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গেও কথা বলেছি। মোহিতলাল হাজরা নামে কোনও ব্যক্তি ওই স্কুলে কাজ করেন না। ব্যাস এইটুকুতেই ফের শাসক দলকে তুলোধোনা করতে শুরু করেছে বাম শিবির।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই স্যোশাল মিডিয়ায় একটি চিঠি ভাইরাল হয়েছে। এক নেতা অপর নেতা সিপিআইএমের লেটারপ্যাডে লেখা চিঠিতে জানাচ্ছেন, পশ্চিমমেদিনীপুরের ছেলে মোহিতলাল হাজরা। গ্রাম পালজাগুন, পোস্ট-জাগুল। দুঃস্থ পরিবারের ছেলে এবং বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ধেড়ুয়া অঞ্চল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্রুপ ডি পদে যে লোক নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে যাহাতে একে নেওয়া যায় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানাচ্ছি। পরে সঙ্গে সাক্ষাত করে নেবো। ২০০৮ সালে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে খগেন্দ্রনাথ মাহাতোকে। চিঠিটি পাঠানো হয়েছে এক প্রভাবশালী বাম নেতার তরফেই। এই তৃণমূলের তরফে এই ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। তাতেই শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে।
পূর্বতন চৌত্রিশ বছরের শাসকদল সিপিআইএমকে কটাক্ষ করে বর্তমান শাসক টিএমসি সেই চিরকুট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবির যথার্থতা প্রমাণ করে। কিন্তু তা এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার সমান৷
পশ্চিম মেদিনীপুর সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষের বক্তব্য, সাংসদ, বিধায়ক বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে যখন কাউকে পাঠানো হয়, তখন চিঠি লিখে সুপারিশ করতে হয়৷ রাজ্যের শাসক দল যে দুর্নীতি করেছে তার সঙ্গে চিরকুটের কোনও সামঞ্জস্যতা নেই। দুর্নীতি সেটাই যখন শাসক দলের নেতা সরকারি আধিকারিকদের চিঠি লিখে সুপারিশ করে৷ তাই এটা কোনও দুর্নীতির পর্যায়ে পড়েই না। নিজেদের দুর্নীতি ঢাকতে যারা এধরনের প্রচার করছেন তাঁরা মুর্খ ছাড়া আর অন্য কিছু নয়।