প্রেমের টানে পাকিস্তান ছেড়েছিলেন আইপিএল মাতানো বিশ্বসেরা লেগস্পিনার

সুমাইয়া দিলদার নামের এই তরুণী জন্মসূত্রে ভারতীয়। তিনি থাকতেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় এক তরুণ ক্রিকেটারের। এই ক্রিকেটারের সঙ্গেই তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ…

Muslim cricketer who left his country to marry a Hindu girl

সুমাইয়া দিলদার নামের এই তরুণী জন্মসূত্রে ভারতীয়। তিনি থাকতেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় এক তরুণ ক্রিকেটারের। এই ক্রিকেটারের সঙ্গেই তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হলেন। কিন্তু জন্মসূত্রে ভারতীয়, হিন্দু, দক্ষিণ আফ্রিকার বাসিন্দার সঙ্গে পাকিস্তানি (Pakistan) ক্রিকেটারের বিয়েটা কীভাবে হল? বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলে খেলছেন এই ক্রিকেটার। 

পাকিস্তানের হয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ খেলতে ১৯৮৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন তিনি। সুমাইয়ার সঙ্গে আলাপ তখনই। দেশে ফিরেও ওই ক্রিকেটারের মনে পড়ে যাচ্ছিল সুমাইয়া দিলদারের কথা। তখনই বুঝেছিলেন, প্রেমে পড়ে গিয়েছেন। সেই ক্রিকেটার আর কেউ নন তিনি ইমরান তাহির। গত এক দশকের অন্যতম সেরা সাদা বলের লেগ স্পিনার ছিলেন ইমরান তাহির।

   

স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের গল্প সিনেমাকেও হার মানাবে। সোশ্যাল মিডিয়া তেমন ভাবে ছিল না সে সময়। এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রেম। সুমাইয়ার সঙ্গে দেখা করার জন্য এরপর বেশ কয়েক বার দক্ষিণ আফ্রিকা যান ইমরান। তবে সুমাইয়া কিন্তু একেবারেই ভাবেননি ইমরানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হবে বা প্রেম হবে। কিন্তু সুমাইয়া প্রেমে পড়ে গেলেন ইমরানের। ধর্ম আলাদা, আলাদা দেশ। দেশ ছাড়তে নারাজ ছিলেন জেদী সুমাইয়া। তাই ইমরান বেছে নিলেন অন্য পথ। ২০০৬ সালে পাকিস্তান ছাড়লেন ইমরান। কারণ সুমাইয়ার শর্তই ছিল যে, নিজের দেশে থাকতে পারবেন না ইমরান, ভালোবাসলে স্ত্রীর দেশে থাকতে হবে তাঁকে। প্রেমিকা সুমাইয়াকে দক্ষিণ আফ্রিকায় এসে বিয়ে করলেন ইমরান। মডেলিং ছেড়ে দিলেন সুমাইয়া। ঘর বাঁধলেন। কিন্তু তাহির কী করবেন? তিনি যে ক্রিকেট পাগল।

Muslim cricketer who left his country to marry a Hindu girl

নিজের যোগ্যতায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ঘরোয়া ক্রিকেটে তখন খেলতে শুরু করলেন ইমরান। ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একদিনের ম্যাচে খেলেন ইমরান। একই বছরের নভেম্বরে জায়গা করে নেন টেস্ট দলেও। পাকিস্তান ছেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার রাস্তাটা কিন্তু মারাত্মক কঠিন ছিল। প্রায় ২৫টি দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। ইংল্যান্ডে চারটি দলের হয়ে কাউন্টিও খেলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার তিনটি ফ্যাঞ্চাইজির হয়েও খেলেন ইমরান। এবং তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে একাধিকবার আইপিএল বিজয়ী।

তিনি ১০৭টি ওডিআই এবং ৩৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ২৩৬ টি আন্তর্জাতিক সীমিত ওভারের উইকেট শিকার করেন। এছাড়াও তিনি ৪৫১টি টি-টোয়েন্টি ও ৩৬৯টি লিস্ট-এ উইকেট শিকার করেছেন এবং ৪৩ বছর বয়স হওয়া সত্ত্বেও টি-২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাম ইমরানের। ইমরান এবং সুমাইয়ার একটি ছেলেও আছে, যার নাম তারা ভালবেসে জিব্রান রেখেছেন।