নিউ টাউন লাগোয়া গুলশান কলোনিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

নিউ টাউন লাগোয়া গুলশান কলোনির (Gulshan Colony) কাছে একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার এই ঘটনার খবর পাওয়া গেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে…

Gulshan Colony fire

নিউ টাউন লাগোয়া গুলশান কলোনির (Gulshan Colony) কাছে একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার এই ঘটনার খবর পাওয়া গেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অগ্নিনির্বাপক বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

তবে, কারখানায় থাকা অত্যন্ত দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন নেভানোর কাজে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে তদন্ত চলছে এবং বিস্তারিত তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ।

   

ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে কারখানার ভিতরে রাখা রাসায়নিক পদার্থ বা বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। কারখানা থেকে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে, যা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পুলিশ এবং র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (আরএএফ) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে।পশ্চিমবঙ্গের অগ্নিনির্বাপক ও জরুরি পরিষেবা মন্ত্রী সুজিত বসু এই ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বে কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকায় অগ্নিনির্বাপক যানের জন্য ‘গ্রিন করিডর’ ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছিলেন।

সম্প্রতি বারাসাতের একটি রাসায়নিক কারখানায় এবং খিদিরপুরের বাজারে আগুনের ঘটনায় অগ্নিনির্বাপক দলের দেরি হওয়ার অভিযোগ ওঠায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গুলশান কলোনির এই ঘটনায়ও অগ্নিনির্বাপক দল দ্রুত পৌঁছানোর চেষ্টা করলেও, কলকাতার ব্যস্ত রাস্তায় যানজটের কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানা গেছে।

কলকাতায় রাসায়নিক কারখানায় আগুনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। গত মে মাসে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে একটি রাসায়নিক কারখানায় আগুন লেগেছিল, যেখানে ঘন ধোঁয়ার কারণে অগ্নিনির্বাপকদের কাজে অসুবিধা হয়েছিল।

এছাড়া, গত জুনে বারাসাতের বামুনমোড়া এলাকায় একটি রাসায়নিক ও ডায়াপার তৈরির গুদামে ভয়াবহ আগুন লেগেছিল, যা নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫০টিরও বেশি অগ্নিনির্বাপক যান কাজ করেছিল। এই ঘটনাগুলি কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকায় অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার প্রশ্ন তুলেছে।

Advertisements

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে কাছাকাছি বাড়িগুলি থেকে মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা তাড়াহুড়ো করে গ্যাস সিলিন্ডার সরিয়েছি যাতে বিস্ফোরণের ঝুঁকি কমে। কিন্তু অগ্নিনির্বাপক যান আসতে দেরি হয়েছে।”

এই ঘটনায় স্থানীয় সাংসদ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আশ্বাস দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের মতো রাজনৈতিক নেতারা পূর্ববর্তী ঘটনায় এই ধরনের আগুনের তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এবং এই ঘটনার ক্ষেত্রেও তদন্তের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই অগ্নিকাণ্ড শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাসায়নিক কারখানার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের কারখানাগুলির জন্য কঠোর অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ম এবং নিয়মিত পরিদর্শনের প্রয়োজন। গত অক্টোবরে মধ্যমগ্রামের একটি তেল ও রাসায়নিক কারখানায় আগুনের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল, যা এই সমস্যার গুরুত্ব আরও তুলে ধরে।

মোদীকে কটাক্ষ করে এক্সে পোস্ট! তেজস্বী যাদবের নামে এফআইআর

ইডি এবং পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আগুনের সঠিক কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে আরও সময় লাগবে। তবে, এই ঘটনা কলকাতার শিল্পাঞ্চলে অগ্নি নিরাপত্তা ও জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থার উন্নতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।