কোচবিহার শুটআউট কাণ্ডে অরুণাচল থেকে গ্রেপ্তার ২ যুবক

কোচবিহারের ডোডেয়ারহাটে শুটআউট কাণ্ডে নয়া মোড়। অরুণাচল প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার হলেন দুই তরুণ (Two Youths Arrested)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম নারায়ণ বর্মন ওরফে…

কোচবিহার শুটআউট কাণ্ডে অরুণাচল থেকে গ্রেপ্তার ২ যুবক

কোচবিহারের ডোডেয়ারহাটে শুটআউট কাণ্ডে নয়া মোড়। অরুণাচল প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার হলেন দুই তরুণ (Two Youths Arrested)। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম নারায়ণ বর্মন ওরফে বিশাল (২০) এবং কিশোর বর্মন ওরফে ভগী (২৪)। দু’জনেই কোচবিহার জেলার পুন্ডিবাড়ি থানার অন্তর্গত মরানদীরকুঠি এলাকার বাসিন্দা।

গত ৯ অগাস্ট ডোডেয়ারহাটে তৃণমূল যুব নেতা অমর রায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন। সেই ঘটনার পর থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। ঘটনার তদন্তে নামে পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। প্রাথমিকভাবে তদন্তে উঠে আসে, পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছিল।

   

এরপর গত ১৭ অগাস্ট অসম-বাংলা সীমান্ত থেকে এক শার্প শুটার বিনয় রায়-কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় উঠে আসে নতুন তথ্য। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, আরও কয়েকজন দুষ্কৃতী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এর পরেই পুন্ডিবাড়ি থানার একটি বিশেষ দল অরুণাচল প্রদেশে পাড়ি দেয়। বৃহস্পতিবার রাতে পাপুমপারে জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নারায়ণ ও কিশোরকে।

পুলিশের দাবি, ধৃত দুই তরুণের মধ্যে কিশোর বর্মনের নাম এর আগেও একাধিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি পুন্ডিবাড়ি থানার দক্ষিণ মরানদীরকুঠি এলাকায় একটি রাস্তার কাজকে কেন্দ্র করে তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, তখন গুলি চালনার ঘটনাতেও কিশোর বর্মন সরাসরি জড়িত ছিল।

অন্যদিকে, নারায়ণ বর্মনের নামে অতীতে বড় কোনো অপরাধের অভিযোগ না থাকলেও পুলিশের ধারণা, শুটআউটের মূল পরিকল্পনায় সেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র এবং অর্থের লেনদেন সম্পর্কেও ধৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে।

Advertisements

এলাকার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দীপেন বর্মন জানান, “ওরা যে এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকবে, আমরা ভাবতেই পারছি না। এর আগে ওদের নাম কোনো অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হতে শুনিনি। তবে যদি সত্যিই এরা দোষী হয়, তাহলে আইনের পথেই শাস্তি হওয়া উচিত।”

ধৃতদের কোচবিহার জেলা আদালতে শুক্রবার পেশ করা হয়। পুলিশ হেপাজতের আবেদন জানানো হয়েছে, যাতে আরও জেরা চালিয়ে মূল ষড়যন্ত্রকারীদের নাম ও উদ্দেশ্য উদ্ঘাটন করা যায়।

পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনার পেছনে একটি বড় অপরাধচক্র সক্রিয় থাকতে পারে। সেই চক্রকে ভাঙতেই একের পর এক অভিযান চলছে। ডোডেয়ারহাট শুটআউটের তদন্তে এবার নজর রাখা হচ্ছে রাজনৈতিক যোগসূত্র, স্থানীয় শত্রুতা এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের দিকেও।

ডোডেয়ারহাটের শুটআউট এখন শুধুমাত্র একটি খুনের মামলা নয়, বরং এলাকাজুড়ে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া একের পর এক দুষ্কৃতী প্রমাণ করছে, সংগঠিত অপরাধচক্র কোচবিহারে শেকড় গেড়ে বসেছে। তবে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ ও ধারাবাহিক তদন্তে আশা করা হচ্ছে, অচিরেই এই ঘটনার সম্পূর্ণ চিত্র স্পষ্ট হবে।