ডুরান্ড সেমিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, প্রথমার্ধে গোলশূন্য ইস্টবেঙ্গল বনাম ডায়মন্ড হারবার

ডুরান্ড কাপ ২০২৫ দ্বিতীয় সেমিফাইনাল (Durand Cup 2025 Semifinal) আজ হয়ে উঠল রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ের মঞ্চ। ঐতিহ্যবাহী ইস্টবেঙ্গল এফসি এবং প্রথমবার ডুরান্ডে অংশগ্রহণ করা দল…

Durand Cup 2025 Semifinal: East Bengal vs. Diamond Harbour FC Ends Goalless in Thrilling First Half

ডুরান্ড কাপ ২০২৫ দ্বিতীয় সেমিফাইনাল (Durand Cup 2025 Semifinal) আজ হয়ে উঠল রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ের মঞ্চ। ঐতিহ্যবাহী ইস্টবেঙ্গল এফসি এবং প্রথমবার ডুরান্ডে অংশগ্রহণ করা দল ডায়মন্ড হারবার এফসি মুখোমুখি হল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। দুই দলের মধ্যে এই প্রথম ডুরান্ডে সাক্ষাৎ হলেও ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। অভিজ্ঞতা বনাম উদ্যম এই দ্বৈরথে প্রথমার্ধে দেখা গেল জমাটি লড়াই, কিন্তু গোলের মুখ খুলল না কোনো পক্ষই।

ম্যাচ শুরু হতেই চমকে দেয় ডায়মন্ড হারবার। প্রথম মিনিটেই সুযোগ তৈরি করেন দলের অন্যতম ভরসা লুকা মাজসেন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি ডিফেন্ডার কেভিন সিবিলে ক্লিয়ারেন্স করে বিপদ এড়ান। শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। কিবু ভিকুনার দল আক্রমণে ধারালো হলেও অভিজ্ঞতার ঘাটতিতে তা বারবার ব্যর্থ হয় ইস্টবেঙ্গল রক্ষণভাগের সামনে।

   

৮ মিনিটে ডানদিক থেকে স্যামুয়েলের পাস ধরে ব্যাকপাস করেন জবি জাস্টিন। পলের নেওয়া দুর্দান্ত শট তালুবন্দি করেন ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন গিল। পরের কিছু সময় ডায়মন্ড আক্রমণ চালালেও ধীরে ধীরে ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে আনতে শুরু করে অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা।

১০ মিনিটে জবি জাস্টিনের দেওয়া ব্যাক পাসে গোলের সুযোগ এসেছিল লাল-হলুদ স্ট্রাইকার দিমিত্রিয়স দিয়ামন্তাকসের সামনে। কিন্তু ডায়মন্ডের গোলকিপার মিরশাদ দ্রুত বল ধরে ফেলেন। ১৫ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোলের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়। বক্সের বাইরে থেকে নাওরেম মহেশ সিংয়ের বাড়ানো পাস ধরে মিগুয়েল শট নিলেও তা চলে যায় পোস্টের বাইরে।

১৯ মিনিটে ডায়মন্ডের হয়ে রবিলাল মান্ডির পাস ধরে জবি জাস্টিন দুর্দান্ত শট নেন। কিন্তু বল গিলের গায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে রেফারি কর্নারের নির্দেশ দেন। ২২ মিনিটে আনোয়ার আলির দুরপাল্লার শটও ফেরান মিরশাদ। একের পর এক সুযোগ তৈরি হলেও শেষ মুহূর্তে গোলের দেখা পাচ্ছিল না কোনো দল।

খেলার ২৪ মিনিটে স্যামুয়েলের নেওয়া শক্তিশালী শট ক্রসবারে লেগে বাইরে যায়। আবার ২৬ মিনিটে স্যামুয়েলের সেন্টার ধরে একেবারে গোলমুখে দাঁড়িয়ে থাকা জবি জাস্টিন একা থাকলেও বল গোলবারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন। ডায়মন্ড হারবারের জন্য এ এক বড় আফসোস হয়ে রইল।

Advertisements

৪২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে মহেশের সেন্টার ধরে দিয়ামন্তাকসের হেড পোস্টের বাইরে চলে যায়। যদিও প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে আবারো গোলের কাছাকাছি পৌঁছে যায় লাল-হলুদের দল। মহেশের নেওয়া জোরালো শট মিরশাদের হাতে লেগে ক্রসবারে বাধা পায়। ফিরতি বলে মিগুয়েলের শটও প্রতিহত হয়। সেই মুহূর্তে বল দখল করতে চলেছিলেন দিমিত্রিয়স দিয়ামন্তাকস, কিন্তু মিকেল কার্তোজার তৎপরতায় গোল লাইন ক্লিয়ার হয়ে যায়।

প্রথমার্ধ শেষে স্কোরলাইন ০-০ থাকলেও ম্যাচের গতি ও উত্তেজনায় বিন্দুমাত্র খামতি ছিল না। দুই দলই একাধিক সুযোগ তৈরি করে, কিন্তু নিখুঁত ফিনিশিংয়ের অভাবে গোলশূন্য থেকে যায় প্রথমার্ধ। ইস্টবেঙ্গল কিছুটা এগিয়ে থাকলেও, ডায়মন্ড হারবারের ছেলেরা আত্মবিশ্বাসী খেলার ছাপ স্পষ্ট রেখেছেন।

এই প্রথম ডুরান্ড খেলতে এসে সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছে ডায়মন্ড হারবার এফসি। কিবু ভিকুনার কৌশলী পরিচালনায় তারা যে কতটা প্রস্তুত, তা আজকের প্রথমার্ধেই পরিষ্কার হয়ে গেল। অন্যদিকে শতাব্দীপ্রাচীন ইস্টবেঙ্গল তাদের পরিণত ফুটবল দিয়ে চাপে রাখে প্রতিপক্ষকে, তবে শেষ মুহূর্তে গোলের মুখ না খুলতে পারার হতাশা থেকেই যায়।

এবার নজর দ্বিতীয়ার্ধের দিকে। ম্যাচের ফয়সালা কোন দিকে গড়াবে, ফাইনালে কে উঠবে? উত্তর লুকিয়ে আছে পরের ৪৫ মিনিটে।