গত শনিবারের নবান্ন অভিযান ঘিরে ছড়িয়েছিল রাজনৈতিক উত্তেজনা (Kunal)। অভয়া কাণ্ডের বছর পূর্তিতে নবান্ন অভিযানে শামিল হয়েছিলেন অভয়া পরিবার এবং শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির একাংশ। একাংশ বলার কারণ এই যে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, সুকান্ত মজুমদার কিংবা দিলীপ ঘোষের মতো দুঁদে বিজেপি নেতারা।
ডোরিনা ক্রসিং থেকে শুরু হয়ে সেই মিছিল পার্কস্ট্রিট অঞ্চলে পৌঁছলে শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি। চলে লাঠি। আহত হন প্রায় ১০০ বিজেপি কর্মী। তার সঙ্গে মাথায় লাঠির বাড়ি খেয়ে আহত হন অভয়ার মা। ভর্তি হন হাসপাতালে। পুলিশ আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি দেখিয়েছিল যে তাদের অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হয়। জুতো দেখানো হয় এবং বিজেপির তরফ থেকে উস্কানিমূলক কাজকর্ম করা হয়েছিল।
ঘটনার পরে কেটে গেছে বেশ কয়েকদিন। আজ মঙ্গলবার পালিশ কর্মীদের অপমানের বিরোধিতা করে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করেন তাদের পরিবারবর্গ। বেশ কিছুক্ষন এই বৈঠক চলার পরেই উপস্থিত সাংবাদিকদের দিক থেকে ধেয়ে আসে কিছু যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন বান।
যেমন অভয়ার মৃত্যুর পর এই সাংবাদিক বৈঠক হলনা কেন? সবচেয়ে মারাত্মক প্রশ্নটি ছিল অনুব্রত মন্ডল যখন অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় অশ্রাব্য ভাষায় বোলপুরের আইসি কে গালিগালাজ করেছিলেন।
তার মা এবং স্ত্রী কে ছাপার অযোগ্য ভাষায় অপমান করেছিলেন সেই সময়ে কেন এই সাংবাদিক বৈঠক করলেন না তারা? কার্যত এই ধরণের প্রশ্ন হয়তো তারা আশা করেননি। ভেবেছিলেন সাংবাদিক বৈঠকে ভিকটিম কার্ড খেলে সহানুভূতি কুড়োনো যাবে। কিন্তু এর ফল যে হবে উল্টো তা হয়তো তারা বোঝেননি।
তাই যুক্তিতে না পেরে রণে ভঙ্গ দিতে হয়েছে মাঝ পথেই। এর মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্ন বানকে কাক চিলের চিৎকার বলে উল্লেখ করে বিতর্ক বাড়িয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। তিনি বলেছেন “অনুব্রতর ব্যক্তিগত কুকথার পরেই ওঁর দল নিন্দা করে ওঁকে ক্ষমা চাইতে বলে। দলই প্রতিবাদ করেছে। উনি ক্ষমা চান।
তাই আলাদা সাংবাদিক বৈঠক করতে হয়নি। আর বিরোধী দলনেতার কুকথা, বিরোধীদের হাতে পুলিশ মার খাওয়ার পর ওই দলের কেউ নিন্দা করেনি। তাই সাংবাদিক বৈঠক। পার্থক্যটা স্পষ্ট।” কুনালের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে রাজনৈতিক মহলে উঠেছে গুঞ্জন বেড়েছে বিতর্কের চাপানউতোর। দলের তরফ থেকে অনুব্রতকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল কিনা এবং কলকাতায় এসে বন্ধ ঘরের ভিতরে তিনি আদৌ ক্ষমা চেয়েছিলেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক রাজনৈতিক সমালোচক।
সমোলোচকরা আরও বলেছেন অনুব্রত যদি দলের চোখে দোষী হয় তবে তাকে নতুন পদ দিয়ে প্রমোশন দেওয়া হল কেন? শুধু তাই নয় রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলেছেন আজ পুলিশের কাছে এফআইআর করতে গেলে অভয়ার বাবা কে কেন হেনস্থার শিকার হতে হয়। কেন কুনাল ঘোষের বিরুদ্ধে কথা বললে তার বাড়িতে আইনি নোটিস পাঠানো হয়।
রবিবার বন্ধ বিদ্যাসাগর সেতু, ১৬ ঘণ্টা যান চলাচলে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা
আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন আজকের সাংবাদিক বৈঠক কি শুধুই ভিক্টিম কার্ড খেলে সহানুভূতি কুড়োনোর জন্য। তবে রাজনৈতিক মহলের সমালোচনায় একটা কথা স্পষ্ট তৃণমূল মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নকে যতই কাক চিলের চিৎকার বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন সাংবাদিকদের এই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়াটা আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অন্তত সরকারের স্বচ্ছতার স্বার্থে দেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি।