‘পলাতক’ তকমাধারী ইসলামি ধর্ম প্রবচন প্রবক্তা বিতর্কিত জাকির নায়েক মনের আনন্দে ছুটি উপভোগ করছে। তার নাগাল পাচ্ছে না ভারতের মোদী সরকার। তবে ডক্টর জাকিরের উপর ভারতের নজরদারি অব্যাহত। ইসলামি ধর্মীয় ভাষণ দেওয়া জাকির নায়েকের ভাষণ পিস টিভিতে শুনত বাংলাদেশে ২০১৬ সালে রমজান মাসে নিরীহদের খুন করা ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরা। পরে এই চ্যানেলের অনুষ্ঠান ভারত ও বাংলাদেশে বন্ধ করা হয়। বিপদ বুঝে ভারত ত্যাগ করে বিভিন্ন ইসলামিক দেশে কূটনৈতিক আশ্রয়ে থাকছে জাকির নায়েক (Zakir naik)।
আপাতত তার ঠিকানা বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের দেশ ইন্দোনেশিয়া। জাকির নায়েক বালি দ্বীপে আছে। সেখানে ৪৫ তলার সমান উচ্চতা থেকে বাঞ্জি জাম্পিং করার ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও শেয়ার করার পর বিশ্বজুড়ে তার অনুসারীদের মধ্যে চমক।
ড.জাকির নায়েকের বয়স ৫৯ বছর। ধর্মীয় বক্তৃতা ও জনসমক্ষে বিতর্কে অংশ নেওয়ার জন্য পরিচিত হলেও, সম্প্রতি তাকে অ্যাডভেঞ্চারাস কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। তার অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে দেখা যায়, বালির একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে বাঞ্জি দড়ি বেঁধে লাফ মারার ভিডিও।
ইন্দোনেশিয়া সফরে বাঞ্জি জাম্পিংয়ের পাশাপাশি জাকির নায়েক ক্লিফ জাম্পিং ও ওয়াটার স্লাইডিংয়েও অংশ নেয়। এর আগেও জাকির নায়েক বাঞ্জি জাম্পিং করেছে।
জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
1. ধর্মীয় বিদ্বেষ বার্তা
২০১৬ সালে ঢাকার গুলশান এলাকার হোলি আর্টিজান ক্যাফের মধ্যে হামলার তদন্তে দেখা গেছে, হামলাকারীদের মধ্যে একজন জাকির নায়েকের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করত এবং তার বক্তৃতা থেকে প্রভাবিত হয়েছিল।
2 ভারতে নিষেধাজ্ঞা
২০১৬ সালে ভারত সরকার UAPA আইনের আওতায় জাকির নায়েকের প্রতিষ্ঠিত ‘Islamic Research Foundation (IRF)’ কে পাঁচ বছরের জন্য বেআইনি ঘোষণা করে। ২০২১ সালে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিষেধাজ্ঞা আরও পাঁচ বছর বাড়ায়। ২০২২ সালে UAPA ট্রাইব্যুনাল এই নিষেধাজ্ঞা বৈধ বলে।
3. অর্থ পাচার ও সম্পত্তির বেআইনি লাভ
ইডি অভিযোগ করেছে, জাকির নায়েক তার প্রচার মাধ্যমের সাহায্যে কোটি কোটি টাকা মুদ্রাহীন স্থানে পাচার করে এবং অবৈধভাবে সম্পত্তি অর্জন করে।
4. ভিন্ন ধর্ম বিপর্যয় ও উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগ
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, তার বক্তব্য মহিলাদের চোখে দৃষ্টি, দের্গি সংঘাত ও ধর্মীয় ভেদাভেদের উত্তেজনা তৈরি করে, যা দেশের সাম্প্রতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারপোল রেড কর্নার নোটিশ ইস্যু করার চেষ্টা করলেও, যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় তা হয়নি। ২০১৯ ও ২০২১ সালে পুনরায় আবেদন করা হয়, কিন্তু আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। ২০১৬ সালে ভারতে ফিরে না এসে জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেয়। ভারত তপ্রত্যর্পণের অনুরোধ করে তবে মালয়েশিয়া সরকার সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে।