রাশিয়াকে ঘিরে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ, উত্তেজনা বাড়ালেন ট্রাম্প

ওয়াশিংটন: ফের উত্তপ্ত আমেরিকা-রাশিয়া সম্পর্ক। প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট দমিত্রি মেদভেদেভের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে রাশিয়াকে ঘিরে দুটি পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড…

trump deploys nuclear submarines russia

ওয়াশিংটন: ফের উত্তপ্ত আমেরিকা-রাশিয়া সম্পর্ক। প্রাক্তন রুশ প্রেসিডেন্ট দমিত্রি মেদভেদেভের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে রাশিয়াকে ঘিরে দুটি পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (trump deploys nuclear submarines russia)। যদিও ওই সাবমেরিন দু’টি ঠিক কোথায় মোতায়েন করা হচ্ছে, সে বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই শুক্রবার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এই ‘গম্ভীর কৌশলগত পদক্ষেপ’-এর কথা জানান।

“এই মন্তব্য নিছক উস্কানি নাও হতে পারে”, স্পষ্ট বার্তা ট্রাম্পের

শুক্রবার ট্রাম্প লেখেন, “ওই মন্তব্য যদি নিছক উস্কানিমূলক কিছু না হয়ে থাকে, বরং তার চেয়েও বেশি কিছু হয়, সে ক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব ছিল প্রতিক্রিয়া জানানো। তাই আমি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছি।” তিনি আরও যোগ করেন, “শব্দের গুরুত্ব রয়েছে। তার প্রভাবও হতে পারে বিস্ময়কর। আমি আশা করি, এই বিবৃতির কারণে আর কিছু ঘটবে না।”

   

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরেই আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ বলছে, বাইডেন-পরবর্তী বিশ্বে আমেরিকার বিদেশনীতি কতটা আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে, তার প্রথম বড় ইঙ্গিত হতে পারে এটি।

মেদভেদেভের পাল্টা হুঁশিয়ারি: ‘ডেড হ্যান্ড’-এর স্মরণ

ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা কড়া প্রতিক্রিয়া দেন রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দমিত্রি মেদভেদেভ। টেলিগ্রামে পোস্ট করে তিনি লেখেন, “যদি ভারত ও রাশিয়ার অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলা হয়, তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘ডেড হ্যান্ড’ সম্পর্কে মনে রাখা উচিত।”

Advertisements

‘ডেড হ্যান্ড’ মূলত সোভিয়েত আমলে তৈরি একটি স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক পাল্টা হামলার ব্যবস্থা, যা কোল্ড ওয়ারের সময় সক্রিয় করা হয়েছিল। শত্রুপক্ষ থেকে পরমাণু হামলার সম্ভাবনা থাকলে তা নিজে থেকেই সক্রিয় হয়ে যেতে পারত। এখন মেদভেদেভের এই মন্তব্যকে অনেকেই দেখছেন ‘পাল্টা পারমাণবিক হুঁশিয়ারি’ হিসেবে।

ভারতকে নিয়েও ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্য

এর আগে ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন যে রাশিয়া ও ভারতের অর্থনীতি ‘মৃত’। তাঁর সেই বক্তব্যেই মেদভেদেভ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। ট্রাম্প পাল্টা জবাবে বলেন, “যদি মেদভেদেভ মনে করেন তিনি এখনও প্রেসিডেন্ট, তবে সতর্ক থাকা উচিত।”

কূটনৈতিক উদ্বেগ তুঙ্গে, পারমাণবিক উত্তেজনার আশঙ্কা

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া-আমেরিকা সম্পর্কে এমন উত্তেজনাপূর্ণ ঘরানা ২০২২-এ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আরও ঘনীভূত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এমন সরাসরি সাবমেরিন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত কেবল প্রতিক্রিয়ামূলক নয়, একটি কৌশলগত বার্তাও বটে, রাশিয়াকে ঘিরে পরমাণু ছায়া আরও ঘন করছে ওয়াশিংটন।