ভোটার লিস্টে বড় পদক্ষেপ, মুখ্য আধিকারিকের চিঠি

কলকাতা: রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের প্রস্তুতি (Voter List Revision)। এই প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক করার লক্ষ্য নিয়ে…

Voter List

কলকাতা: রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের প্রস্তুতি (Voter List Revision)। এই প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক করার লক্ষ্য নিয়ে এবার বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, শুক্রবার থেকেই রাজ্যের সমস্ত স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিকে চিঠি পাঠানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। এই চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (Chief Electoral Officer) মনোজ কুমার আগরওয়াল।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ও প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে বুথ লেভেল এজেন্ট (Booth Level Agent বা BLA) নিয়োগ করতে হবে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে। সেই সঙ্গে BLA-দের সংখ্যা ঠিক কতজন নিয়োগ করা হয়েছে, সেই তথ্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমিশনকে জানাতে হবে।

   

কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকার এই স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন চলাকালীন কোনওরকম অস্বাভাবিকতা, দ্বৈত নাম বা অবৈধ অন্তর্ভুক্তির মতো ঘটনা যাতে না ঘটে, সেই জন্যেই প্রতিটি দলের নিজস্ব প্রতিনিধি হিসেবে বুথ লেভেল এজেন্টদের উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে কমিশন।

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়াল বলেন, “জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে আমরা এই চিঠি পাঠাচ্ছি। আমাদের অনুরোধ, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান জানিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে BLA-র তথ্য আমাদের দেয়।”

বুথ লেভেল এজেন্ট হলেন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তি, যিনি নির্দিষ্ট একটি বুথের দায়িত্বে থাকেন এবং ভোটার তালিকার সংশোধনের সময় ভোটারদের তদারকি, নাম অন্তর্ভুক্তি, অপসারণ বা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।

Advertisements

BLA-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সরাসরি সমন্বয় রাখে। কমিশনের মতে, যেহেতু ভোটার তালিকা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মেরুদণ্ড, তাই সেই তালিকা যেন নিখুঁত হয় এবং কোনও অনিয়ম না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ।

এই নির্দেশিকা পেয়ে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। শাসক ও বিরোধী শিবির— উভয়ই বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই বুথ ভিত্তিক কাজ শুরু করেছি। আমাদের দলের সংগঠন শক্তিশালী, তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা তথ্য পাঠিয়ে দেব।”

অন্যদিকে বিজেপি-র তরফেও জানানো হয়েছে, “গণতন্ত্র রক্ষায় নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত ইতিবাচক। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সমস্ত তথ্য পাঠাব।”

২০২৫-এর বিধানসভা নির্বাচন এবং ভবিষ্যতের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে এই স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের গুরুত্ব অনেকটাই বেশি। নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগ যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ তা বলাই যায়। এখন দেখার, রাজনৈতিক দলগুলি কতটা দ্রুত ও সঠিকভাবে তথ্য জমা দেয় এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করে তোলে।